প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ০৮ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার:
দুঃসময় এবং অবিমৃষ্যকারীতা:
১০০ বছরের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক মহামারীর কঠিন দুঃসময় অতিক্রম করছে বিশ্ববাসী। চারদিকে ভয়, গুজব, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ছড়াছড়ি। এর মাঝে সচেতনভাবে নিজেকে রক্ষা করা এবং একটি কার্যকরী ভ্যাক্সিনের অপেক্ষা করা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছুই করণীয় নেই। এবং প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে সফলও বেশ কিছু দেশ।
আমাদের দেশের পরিস্থিতি বেশ নাজুক। আক্রান্তের হার উর্ধগামী। যদিও রিপোর্টেড মৃত্যুহার এখনো কম। কিন্তু এতে আত্মপ্রসাদের কোন সুযোগ দেখি না। পুরো ভারতীয় উপমহাদেশেই তাই। যার কারণ হতে পারে এই অচেনা ভাইরাসটির যে স্ট্রেইন বা রূপ এদেশগুলাতে ছড়িয়েছে তা তুলনামূলক ভাবে কম ফ্যাটাল বা বিধ্বংসী। কিন্তু তারপরও এতে আত্মপ্রসাদে ভোগা ও রিলাকটেন্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই। অত্যন্ত সংক্রমণশীল ভাইরাসটি কিন্তু নতুন সংক্রমণ করেই যাচ্ছে এবং আমাদের সনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন এগার হাজারের উপরে। দ্বিতীয় কোন স্ট্রেইন যে আসবে না, বা সার্কুলেটেড জীবাণুটি তার রূপ পরিবর্তন করবেনা তার কোনই নিশ্চয়তা নেই। কারণ বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে প্রতিনিয়ত দেখছেন অচেনা এই ভাইরাসটি গত চার মাসে প্রায় ৪০০ বারের মত রূপ পরিবর্তন করেছে।
এত কিছু বলার উদ্দেশ্য একটাই, এখন আমাদের ব্যক্তিগত ভাবে সচেতন হতে হবে। আমরা যেন মুনাফালোভী ব্যাবসায়ীদের সুবিধার জন্য শপিংমল গুলোতে ঘুরাঘুরি না করি, নিজ নিজ প্রার্থনা বাড়ীতেই করি। কারণ অন্যের অবিমৃষ্যতার আর অর্থহীন সিদ্ধান্তের বলি নিশ্চিত আপনি হতে চাইবেন না। কারণ আক্রান্ত হলে আপনার বা পরিবারের চিকিৎসার সুযোগ খুব কম আর এত রোগীর ভার আমাদের হাসপাতাল গুলো অচিরেই আর নিতে পারবেনা। কাজেই আরো কিছুদিন কষ্ট করে বাসায় থাকুন, সাবধানে থাকুন। কারণ অসুস্থ হলে এই অমানবিক সময়ে পাশে কাউকে পাওয়া কঠিন। একটি রোগমুক্ত নতুন দিনের প্রত্যাশায় আমরা সবাই।
লেখক:
ডা. ফারহানা সেলিম
সহযোগী অধ্যাপক
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ।