প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ জুলাই, ২০২০, শুক্রবার
ডা. গাজী ইয়াসিনুল ইসলাম
এমবিবিএস, এফসিপিএস (হেমাটোলোজি)
মেডিক্যাল অফিসার (ডিপার্টমেন্ট অব হেমাটোলোজি, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল)
আমি ৪র্থ ব্যাচে ৬ জুন থেকে ১২ জুন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডিউটি করি এবং ২২ জুন ও পরবর্তী ৩০ জুন স্যাম্পল দিয়ে কোভিড পজেটিভ রিপোর্ট পাই। ৫ জুলাই স্যাম্পল দিয়ে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। আবার ১১ জুলাই থেকে ডিউটির এসএমএস পাই। আমি ডিউটির জন্য প্রস্তুত ছিলাম।
গত রাতে আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রাথমিক ভাবে আমার হার্ট রেট ১৪০ এবং অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯২-৯৪% ছিল। বাসায় আমি একা। আমি একাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এর দিকে রওনা দিয়ে বাসা থেকে ১০-১২ গজ দূরে যেতেই হার্ট রেট আরো বেড়ে যায়, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে, মাথা ঝিম ধরে। বুঝলাম শকে চলে যাচ্ছি। হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব নয়। বাসায় ফিরতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না। রাস্তায় অজ্ঞান হলে মৃত্যু সন্নিকটে। অতিকষ্ঠে বাসার সামনে এসে শুয়ে পড়লাম। প্রতিবেশীদের একজন আমাকে সিএনজিতে তুলে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলেন। একটা ওষুধ খেয়ে নিলাম। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইসিজি করতে ঘন্টা খানেক লেগে গেল। তখন হার্ট রেইট কমে এসেছে, একটু ভাল বোধ করছিলাম। বুকের এক্সরে করালাম, বাইল্যাটেরাল ওপাসিটি (ছোট) ছিল।
রাস্তা থেকে বাসায় ফেরার ১০-১৫ সেকেন্ড মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে। কেন জানি তিনি আমায় অতি ভালবাসেন।
আপনারা কেউ করোনাকে কে সহজ ভাবে নিবেন না। যারা পজেটিভ হয়েছেন; নেগেটিভ হবার পর তাদের অন্তত এক মাস বিশ্রাম দেওয়া উচিত।
যারা আমাকে সাহায্য করেছেন কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের ছোট করব না। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুক।