সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০
কোভিড পজিটিভ এর হাসপাতাল ভর্তির ক্রাইটেরিয়া হওয়া উচিত এরকম-
১। পজিটিভ কিন্তু লক্ষন অনুপস্থিত- সেলফ আইসোলেশনে বাড়িতে, যোগাযোগ রক্ষা করবে স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে। সবার লক্ষন থাকেনা, কোন শারীরিক সমস্যা ও হয় না। ৮০% রোগীই এরকম।
২। পজিটিভ কিন্তু কিছু লক্ষন উপস্থিত- সেলফ আইসোলেশন বাড়ীতে, সাথে লক্ষন সমূহের ঔষধ খাবে বাড়ীতে বসেই।হটলাইনে যোগাযোগ রক্ষা করবে ডাক্তারের সাথে। নিয়মকানুন গুলো মেনে চলবেন। বিরাট অংশ বাড়ীতেই ভালো হয়।
৩। পজিটিভ এবং বেশ কয়েকটি লক্ষন উপস্থিত। নিকটস্থ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসা চলবে ডাক্তারের পরামর্শ মতো।
৪। শ্বাস কষ্ট শুরু- অক্সিজেন দিয়ে রেফার্ড করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে।
এরকমভাবে ভাগ ভাগ করে ভর্তি করলে বিক্ষোভ ও হবে না। অভিযোগ ও কমে যাবে। আর তাছাড়া বড় হাসপাতালগুলোতে চাপ কমবে। এখনতো সবই করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এতে করে সমস্যা বাড়ছে।
এ ধরনের জাতীয় সমস্যায় সকলের সহযোগিতা কাম্য। জনগণ সহযোগিতা না করলে এসব সমস্যার ভালো সমাধান পাওয়া যাবে না। আর সকল জনগন একটু বাস্তবমুখী হবেন। কেননা সমস্যা সামান্য থাকলে অবজারভেশন করার জন্যই অনেক সময় ভর্তি করা হয়। যার অবজারভেশন দরকার শুধু তার পিছনে ডাক্তারের সময় দেয়ার প্রয়োজন হয় না, নিজে একটু সতর্ক থাকলেই হয়। আর এরকম ভয়াবহ ছোয়াঁচে রোগের রোগীর সাথে সাথে নার্সিং কাউন্টার দেয়ার ও সুযোগ নেই।
কাজেই আপনারা এরকম চিন্তা না করাই ভালো যে অবজারভেশন এ যারা আছেন তাদের সাথে স্বাস্থ্যকর্মীগন প্রচুর সময় দিবেন। ওখানে সময় দেয়া হয়না কোথাও। আর পিপিই নিয়ে বেশী কথা না বলাই ভালো। সব কথা আমরা বলি না পাব্লিক প্লেসে। যা পড়ার পত্রিকা থেকেই পড়ে নিবেন। আরেকটি কথা হলো কেউ পজিটিভ হলে আপনি প্রতিবেশী হিসেবে পাগল হবেন না। তাকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনি হিতকর মনে করলে ও আসলে বিপরীত হয়। সে যদি কোন গাড়ী দিয়ে যায় তবে সেখানে ও ছড়াবে। কয়েকজন ঘুরে আপনি ও সে গাড়ীর যাত্রী হতে পারেন এবং আক্রান্ত হতে পারেন।
আমরা সর্বদা আপনাদের পাশেই আছি তবে অবশ্যই যৌক্তিকভাবে। আপনি একাই জনগন নয়। আরো আছে যারা আক্রান্ত হবেন, আরো আছেন যারা অন্যান্য রোগে ভুগছেন। তাদের সবাইকেই সার্ভিস দিতে হবে আমাদেরকেই। আমরা যৌক্তিকভাবে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেই চলবো। যুদ্ধে আহত হওয়া কিংবা মরে যাওয়া কোন ক্রেডিট নয়, এটি নিতান্তই দূর্ঘটনা যেটি ঘটার অনেক বেশী সম্ভাবনা থাকবে ডাক্তার এবং নার্সদের। কাজেই জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আপনাদের ও ধৈর্য্য ধরতে হবে, আমরা ও চেষ্টা করবো বেঁচে থেকে সুস্থ থেকেই সার্ভিস দিতে। যদি আমাদের কথা শুনেন তো আপনি ও ভালো থাকবেন,আমরা ও ভালো থাকবো।
শেষ কথা হলো আমরা যাকে বাড়ীতে রাখবো তাকে যদি আপনারা ডিস্টার্ব করেন তবে সংক্রামক ব্যাধি আইনে আপনাকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা কিংবা ৩ বছর জেল দিবো। অপকর্ম করার আগে হিসেব করে করবেন। পৃথিবী শুধু আপনার একার নয় বরং সবার। আর যারা আমাকে চিনেন তারা জানেন আমি কেমন! আমাদের কথা না শুনলে তাই হবে যা বলছি।
ঘরে থাকুন। সুস্থ থাকুন।
ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া