১৭ এপ্রিল ২০২০
ডাঃ মোহাম্মদ সরোয়ার হোসাইন
নির্বাহী পরিচালক, বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউন্ডেশন
কেউ কেউ আশা দেখাচ্ছেন আগামী ৬ মাসের মধ্যে ভ্যাক্সিন চলে আসবে। ৪ মাসে ভ্যাক্সিন ট্রায়াল শেষ হবে! অতীতে এত কম সময়ে ভ্যাক্সিন বাজারে আসার কোন রেকর্ড নেই। বরং বাজারে আসতে সাধারণত কয়েক বছর লাগে। মনে রাখতে হবে ড্রাগ ট্রায়াল আর ভ্যাক্সিন ট্রায়াল এক নয়। আরএনএ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরি ভ্যাক্সিন বানানো অনেক কঠিন। ভাগ্যও প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, এইচআইভি (আরএনএ ভাইরাস) জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে। কিন্তু এপর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেন নি গবেষকরা। এত রিসার্চ হওয়ার পরও তা ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে করোনা সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছু অজানা।
ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে জোর করে সময় কমিয়ে ফেলা যায় না। তিনটি ধাপে হিউমান ট্রায়াল হয়। করোনার ক্ষেত্রে এনিমেল ট্রায়াল স্টেপ বাদ দিয়েছে বেশির ভাগ কোম্পানী। অনেক বিশেষজ্ঞ এটি নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেছেন। ভ্যাক্সিন পুশ করে অপেক্ষা করতে হয়। পর্যায়ক্রমে দেখা হয় এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারে কিনা। এটি কতদিন স্ট্যাবল (stable) থাকে তা জানা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি মাত্র কয়েক মাসের জন্য এটি কার্যকরী থাকে, তবে তা ব্যবহার করে তেমন লাভ নেই। প্রথম ফেইজে ১০০ জনের উপর ট্রায়াল হয়। এরপর সেকেন্ড ধাপে আরো বেশী মানুষের উপর। শেষ ধাপে পপুলেশন/কমিউনিটি লেভেলে ট্রায়াল করা হয়।
যতই টেকনোলজি উন্নত করুক না কেন ১২-১৮ মাসের আগে ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু বললেই তো হবে না, তা প্রমাণ করতে হয়। তাই আগামী বছরের শেষ নাগাদ করোনার ভ্যাক্সিন বাজারে আসতে পারে যদি সফলতার মুখ দেখে। আর এই ভ্যাক্সিন আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে আসতে আরো অনেক সময় লাগবে। আমরা যেমন গরীব মানুষকে হিসাবের খাতায় তেমন গুরুত্ব দেই না, তেমনিভাবে উন্নত দেশগুলো তাদের স্বার্থ আগে দেখবে। তাই আমাদের পেতে আরো দেরী হবে।
ভ্যাক্সিনের চেয়ে বরং এন্টি-ভাইরাল ড্রাগ তাড়াতাড়ি আসতে পারে। এর ট্রায়াল ভ্যাক্সিনের মত এত জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী নাও হতে পারে।