প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩০ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার:
মহামারী করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চলমান আছে সকল প্রকার জরুরী অপারেশনের কাজ। জীবনের তোয়াক্কা না করে রোগীদের সেবায় সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কোন এক দুপুরবেলায় ধারালো হাতিয়ারের আঘাতে গলার বাম পাশে গভীর ক্ষত সহ এক রোগী ভর্তি হন হাসপাতালটির নাক, কান ও গলা বিভাগে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অব্দি ব্যান্ডেজ দিয়ে কাটা স্থান থেকে কোনমতে রক্ত ঝরা বন্ধ করতে সক্ষম হয় রোগীর লোকজন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। প্রচন্ড রক্তক্ষরণে রোগীর দুর্বল দশা। ডাক্তারদের তদারকি ও রোগীর স্বজনদের ৪ ঘন্টা যাবৎ লাগাতার চেষ্টায় প্রয়োজনীয় রক্তের জোগান হলে রোগীকে অপারেশন টেবিলে নেওয়া হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত ডাক্তারগন রোগীর যথাযথ দেখভাল করেছেন। এরপর তাকে অজ্ঞান করে ক্ষতস্থান খুলে দেখা যায় আঘাতের গভীরতা গলার মেরুদণ্ড পর্যন্ত ঠেকেছে, ক্ষতস্থানের গভীর অনবরত রক্তপাত হচ্ছে। এমতাবস্থায় ডাক্তারগণ তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রক্তপাত বন্ধ করে ক্ষতস্থান সেলাই করে অপারেশন শেষ করেন।
হাসপাতালে আসার পর থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত প্রায় ৭-৮ ঘন্টা ৫ জন ডাক্তার সহ ৮ জনের একটি দল ও রোগীর স্বজনদের প্রাণান্ত চেষ্টায় রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানো যায়। অবস্থার উন্নতি দেখে তিন দিন পর চিকিৎসকগণ সুস্থাবস্থায় তাকে রিলিজ দেন।
প্রতিনিয়ত এমন ঘটনার সাক্ষী রামেকের একজন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিলন চৌধুরী তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, “এই রকম কাহিনী প্রত্যেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ঘটছে। আমরা ডিউটির গন্ডি পেরিয়ে, করোনার ভয় মাড়িয়ে, পরিবার পরিজনদের ঠকিয়ে, ক্লান্তিকে দূরে সরিয়ে রোগীদের স্বার্থে আপনাদের পাশে আছি, থাকবো। আপনারা ছোটোখাটো বিষয়ে হাসপাতালে এখন না এলেই ভালো হয়।”
নিজস্ব প্রতিবেদক/ আব্দুল্লাহ আল মারুফ