১৩ এপ্রিল, ২০২০
গতকাল জাতীয় গণমাধ্যমে খবর বের হয়, বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশে ৪৪ টি করোনা টেস্টিং বুথ বসেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়স্ক মডেল অনুসরণ করে তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে দেশিয় করোনা টেস্টিং বুথ গুলো।
কোরিয়ান টেস্টিং বুথ গুলোর ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায় –
- একটি আধুনিক প্রযুক্তির প্লাস্টিকের বাক্স বুথ হিসেবে ব্যবহৃত হবে যেখানে নমুনা সংগ্রাহক ও রোগী প্লাস্টিকের দেয়ালের দুইপাশে অবস্থান করবেন।
- প্লাস্টিকের দেয়াল বায়ুরোধী। ফলে রোগী ও নমুনা সংগ্রাহকের মধ্যে বায়ু চলাচল হবে না। দেয়ালের দুটি ছিদ্র দিয়ে লম্বা গ্লাভস বাইরের দিকে রোগীর পাশে থাকবে। গ্লাভসের প্রান্ত প্লাস্টিক দেয়ালে এমনভাবে লাগানো যেন কোনো ফাঁক না থাকে ও বায়ুপ্রবাহ রোধী হয়। এতে নমুনা সংগ্রাহক সংক্রমিত হবেন না। বারবার কিংবা সারাদিন পিপিই পরে থাকার বিড়ম্বনা নেই।
- দক্ষ মেডিকেল স্টাফের সাহায্যে বুথগুলো পরিচালিত হবে। একজন থাকবেন নমুনা সংগ্রহ প্রান্তে, আরেকজন উল্টো দিকে প্লাস্টিকের দেয়ালের বাইরে। বাইরের জন নমুনা সংগ্রহের আগে পরে জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থেকে প্লাস্টিক দেয়ালের বাইরের অংশ জীবাণু মুক্ত করবেন।
- নেগেটিভ এয়ার প্রেশারের ব্যবস্থা থাকবে যার কারণে ক্ষতিকর জীবাণু বুথের বাইরে আসতে পারবে না।
- একজন রোগী বুথে ঢোকার পর ইন্টারকমের সাহায্যে অপর পাশে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করবেন। তিনি প্রয়োজন মনে করলে নমুনা সংগ্রহ করবেন। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাবার গ্লাভস অথবা হ্যান্ড শিল্ড প্লাস্টিক প্যানেলের সাথে সংযুক্ত থাকবে যাতে সংক্রমণের ঝুঁকি না থাকে।
- সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সমাপ্ত হলে পরবর্তী ব্যক্তি ঢোকার পূর্বে পুরো বুথটিকে নেগেটিভ এয়ার প্রেশারের মাধ্যমে এবং জীবাণু নাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হবে।
অপরদিকে বাংলাদেশের করোনা টেস্টিং বুথগুলোতে, (গণমাধ্যমে প্রচারিত বুথের ছবি থেকে দেখা যায়)
- কাঁচে ঘেরা কেবিনের মতো দেখতে নমুনা সংগ্রহ বুথটি। স্বাস্থ্যকর্মীরা বুথের বাইরে দাঁড়ানো মানুষের শরীর থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করবেন। এজন্য কাচের দেয়ালে ফুটো আছে কিন্তু এর সংগে লম্বা গ্লাভস যুক্ত নেই। দেয়ালের দুইপাশে অবাধে বায়ু চলাচল ও সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি।
- প্রতিবার নমুনা সংগ্রহের সময় ফুটো দিয়ে গ্লাভস পরা হাত প্রবেশ করিয়ে সংগ্রহ করে আবার হাত ভিতরে নিতে হবে। ফলে জীবাণু রোগীর পাশ থেকে নমুনা সংগ্রাহকের পাশে চলে যেতে পারে।
- খোলামেলা ফুটো দিয়ে হাঁচি কাশি উভয় দিকেই ছড়িয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি আছে।
- সংগৃহীত নমুনা রাখার স্থান যা বাইরে হবার কথা, এদেশের বুথ গুলোয় তেমন কিছু দেখা যায় নি।
- নমুনা সংগ্রহের জন্য যথেষ্ট প্রশিক্ষণ না থাকায় প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব রয়েছে। এ নিয়ে জনমনে শংকা দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের খবরে তাঁদের মাঝেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক ভাইরাল হওয়া পোস্টের মাধ্যমে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত প্রশিক্ষণ, দৃশ্যমান ত্রুটি সংশোধন করে স্বাস্থ্যকর্মী ও জনমনের আশংকা দূর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক/সুবহে জামিল সুবাহ