প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৯ আগস্ট, ২০২০, শনিবার
অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণ চন্দ্র গাঙ্গুলী
বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,
ইমপালস হাসপাতাল
বিশ্বে সর্বপ্রথম করোনা ভাইরাস দ্বারা দ্বিতীয়বার সংক্রমণ প্রমাণিত হলো। এর পূর্বে যাদেরকে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত বলা হয়েছিল, তারা সবাই হয় প্রথমবার সংক্রমণে চলমান কিংবা অপ্রমাণিত। আলোচ্য কেসটি হংকং এ প্রথম সংক্রমিত হয়েছিল মধ্য এপ্রিলে। তার ১৪২ দিন পর স্পেন এবং যুক্তরাজ্য ভ্রমণের পর দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হন মধ্য অগাষ্ট ‘২০ এ। যেটি জিনোম সিকুয়েন্স বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তিনি উপসর্গহীন ছিলেন।
এর থেকে বেশ কয়েকটি অনুসিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করা যেতে পারে-
১/ কোভিড-১৯ এ দ্বিতীয়বার সংক্রমণ সম্ভব তবে ভিন্ন স্ট্রেইন দ্বারা।
২/ দ্বিতীয়বার সংক্রমণ কয়েক মাসের মধ্যেই হতে পারে।
৩/ দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হবে কম মারাত্মক।
৪/ দ্বিতীয়বার সংক্রমণ লক্ষ্মণবিহীন হলেও তিনি অন্যদের রোগটি ছড়াবেন।
৫/ এটি প্রমাণ করে কারো কারো দেহে সুরক্ষার এন্টিবডি মাত্র চার মাস স্হায়ী হতে পারে।
৬/ এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে হার্ড ইমিউনিটি সম্ভবত কখনোই এই ভাইরাসটিকে পৃথিবী ছাড়া করতে পারবে না বা পৃথিবী এই ভাইরাসমুক্ত হবেনা।
৭/ ভাইরাসটি সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো পৃথিবীতে থেকে যাবে। যদিও সংক্রমণ দ্বারা স্বল্পস্থায়ী ইমিউনিটি তৈরী হবে।
৮/ যেহেতু ইমিউনিটি স্বল্পস্থায়ী হতে পারে তাই যাদের একবার সংক্রমণ হয়েছে তাদেরও ভ্যাক্সিন লাগবে।
৯/ যারা একবার কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে তাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে; যথা- মাস্ক পরা, সাবান পানিতে হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রেখে চলা ইত্যাদি।
১০/ একটি ভ্যাক্সিন আজীবন সুরক্ষা দিবে না এবং সকল স্ট্রেইন থেকে সুরক্ষা দিবে না। ইমিউন রেস্পন্স কত শক্তিশালী এবং কতদিন থাকবে তা জানতে হবে।
করোনা ভাইরাস এর বেশ কয়েকটি স্ট্রেইন পূর্বেই পৃথিবীতে ছিল। তার সাথে যুদ্ধ করেই মানবজাতি এগিয়ে চলছিল। এখন তারসাথে যে নতুন স্ট্রেইনটি যুক্ত হলো, তাকে মোকাবেলা করেই আমাদেরকে আগামী দিনগুলোতে চলতে হবে। বিজ্ঞানের জয় হোক। করোনা মোকাবেলার পথ সুগম হোক।।