৩ এপ্রিল, ২০২০
দেশে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ(কোভিড-১৯) এর বর্তমান পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিম্নবর্ণিত ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেনঃ
১) করোনা ভাইরাস সম্পর্কে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এ ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।
২)লুকোচুরির দরকার নেই। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
৩)পিপিই সাধারণভাবে সকলের পরার দরকার নেই। চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য পিপিই নিশ্চিত করতে হবে। এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত পিপিই, মাস্কসহ সকল চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত রাখা এবং বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
৪) কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত সকল চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, এ্যাম্বুলেন্স চালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।
৫) যারা হোম কোয়ারান্টাইন বা আইসোলেশনে আছেন, তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে হবে।
৬) নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
৭) নদীবেষ্টিত জেলাসমূহে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হবে।
৮)অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে হবে।
৯) পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশের সকল সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।
১০) আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। জাতীয় এ দূর্যোগে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সকল সরকারি কর্মকর্তাগন যথাযথ ও সুষ্ঠু সময়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
১১) ত্রাণ কাজে কোনো ধরনের দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
১২) দিনমজুর, কৃষক, শ্রমিক যেন অভুক্ত না থাকে। তাদের সাহায্য করতে হবে। খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য অতিরিক্ত তালিকা তৈরি করতে হবে।
১৩) সোশ্যাল সেফটি নেট কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে।
১৪) অর্থনৈতিক কার্যক্রম যেন স্থবির না হয়, সে বিষয়ে যথাযথ নজর দিতে হবে।
১৫) খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। কোন জমি যেন পতিত না থাকে।
১৬) সরবরাহে ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে, যাতে বাজার চালু থাকে।
১৭)সাধারণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
১৮)জনস্বার্থে বাংলা নববর্ষের সকল অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে,যাতে জনসমাগম না হয়।ঘরে বসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নববর্ষ উদযাপন করতে হবে।
১৯)স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজের সকল স্তরের জনগণকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।প্রশাসন সকলকে নিয়ে কাজ করবে।
২০)সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ জেলাপ্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
২১)জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকা প্রণয়ন করে দুঃস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করবেন।
২২)সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেমনঃ কৃষি শ্রমিক,দিনমজুর, রিক্সা/ভ্যানচালক,পরিবহন শ্রমিক, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, পথশিশু, স্বামী পরিত্যক্তা /বিধবা নারী এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ নজর রাখাসহ ত্রাণ সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
২৩)প্রবীণ নাগরিক ও শিশুদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২৪)দূর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি)যথাযথ ভাবে প্রতিপালনের জন্য সকল সরকারি কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
২৫)নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উৎপাদন, সরবরাহ ও নিয়মিত বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া মনিটরিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
২৬)আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করবেন না।খাদ্যশস্যসহ প্রয়োজনীয় সকল পন্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।
২৭)কৃষকগণ নিয়মিত চাষাবাদ চালিয়ে যাবেন।এক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে।
২৮)সকল শিল্প মালিক,ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি পর্যায়ে নিজ নিজ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ি-ঘর পরিষ্কার রাখবেন।
২৯)শিল্প মালিকগণ শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে উৎপাদন অব্যাহত রাখবেন।
৩০)গণমাধ্যম কর্মীরা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে যথাযথ ভূমিকা পালন করে চলেছেন।এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের গুজব ও অসত্য তথ্য যাতে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে,সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
৩১)গুজব রটানো বন্ধ করতে হবে।ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নানা গুজব রটানো হচ্ছে। গুজবে কান দিবেন না এবং গুজবে বিচলিত হবেন না।
এমতাবস্থায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।বিষয়টি অতীব জরুরি।