শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০
গেরিলা যুদ্ধের নাম শুনলেই ভেসে উঠে মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়ংকর গেরিলাদের কথা। যারা পাকিস্তানিদের অন্তরাত্মা কাপিয়ে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেছিলো। করোনায় গেরিলা পদ্ধতি শুনে নিশ্চয়ই অবাক হয়ে যাচ্ছেন। আসলে সময়টাই এখন অবাক হবার। অবাক অবাক সিদ্ধান্ত দেখেছেন। অবাক করা করোনার পরীক্ষা দেখেছেন। অবাক করা গার্মেন্টস ছুটি, আবার ছুটি বাতিল করে ৭০-৮০ কিমি পর্যন্ত শ্রমিকদের হাটুনি দেখেছেন।
অবাক করা আরো কিছু আপনারা নিজেই করছেন এবং করবেন ও। যেমনঃ এক এমপি সাহেব করোনা মোকাবিলায় প্রশাসন, পুলিশ,আর্মির নাম মুখে আনলেন, কিন্তু কোন ডাক্তারের নাম মুখে ভুলে ও আনেননি। অর্থাৎ, এদের প্রয়োজন হয়না এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়, এমনকি এই মহামারিতে ও। আমার এলাকার এমপি অবশ্য ৩০০+ পিপিই এর ব্যবস্থা করেছেন শুধু আমার উপজেলার জন্যই। তারা এগুলো কিনে এনেছেন। সরকার থেকে মেরে দেননি। ২০০+ পিপিই ভালো মানের। এফএফপি ২ মাস্ক দিয়েছেন। তারা এসময়ের ব্যতিক্রম এবং যোগ্য মানুষ। তারা কট্টর জাতীয়তাবাদী মানুষ। দেশের মানুষকে কিভাবে ভালোবাসতে হয় এটি তারা জানেন।
লকডাউন শব্দটি জানেনা এমন মানুষ এখন পৃথিবীতে বিরল। সারা পৃথিবী কোন না কোনভাবে লকডাউন হয়ে গেলো।বাংলাদেশে ও চলছে। সিটি লকডাউন যেমন হচ্ছে, তেমনি লকডাউন হচ্ছে জেলাগুলো। আমার ইনটেনশন হলো এর ফলাফল নিয়ে। আমার কিছু প্রশ্ন আছে এটি নিয়ে।
১। যে লকডাউন হচ্ছে তাতে করে কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছি তো?
২। লকডাউন কার্যত হচ্ছেতো?
৩। শহর আর গ্রামের চিত্র একই না ভিন্ন?
৪। রোগ থেকে বাচাতে গিয়ে আমাদের মানুষগুলো না খেয়ে মারা যাবে নাতো?
৫। আমরা যে ত্রান কার্যক্রম চালাচ্ছি তা সন্তোষজনক কি না?
আমাদের দেশের মানুষ অনেক বেশী। প্রথম দফা ছুটি পেয়ে লোকজন গ্রামে ছুটলো। সবাই দেখলেন ঘরে ফেরার ছবিগুলো। আমরা সবাই যখন নিরাপদ দূরত্ব নিয়ে সোচ্চার জনগন তখন কাছে থাকা নিয়ে সোচ্চার। ছুটির আমেজ পেয়ে দলে দলে লোকজন আড্ডায় জড়ো হচ্ছে। চায়ের দোকান হাট বাজার লোকে লোকারন্য।
একাধিক সিটি লকডাউন হবার পর মানসম্মান রক্ষার্থে জেলাগুলোতে ও লকডাউন চালু হয়ে গেল। এ ব্যাপারটা এমন যে কোন ডিসি স্যার যদি লকডাউন না করেন তবে তাঁর মানসম্মান চলে গেলো। যে যত তাড়াতাড়ি লকডাউন করতে পারবেন তিনিই হিরো। অর্থাৎ এখানে কাজের চেয়ে তৎপরতাই মুখ্য। কয়েকটি কোভিড পজিটিভ হওয়া মানেই এই জেলা লকডাউন। যেন কয়েকজন মানুষ সারা জেলায় ছড়াবে! আর লকডাউন হলেই সকল মানুষ দলে দলে ঘরের কোনে এসে লুকাবে!
সিটি লকডাউন কিছুটা কার্যকরী হলে ও জেলার লকডাউন ১০০% অকার্যকর। গ্রামের মানুষ লকডাউন বুঝে না। আমাদের যে অল্পশিক্ষিত সম্প্রদায় ওরা আরো ভয়ংকর। ওরা মনে করে ওদের কিছু হবে না। কাজেই প্রতিদিন বাজার করা, চায়ের আড্ডা তৈরি করা,তাসের আড্ডা তৈরি করা তাদের সময় কাটানোর নিয়ামক হয়ে উঠেছে। সাথে যোগ হচ্ছে মসজিদগুলো।ইমামগণ মানছেন না সরকারি বিধি। তারা এখনো মনে করছেন মসজিদ থেকে কোন রোগ ছড়ায় না। জামাত তৈরি করার সরকারি সিস্টেমের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। ভয়ে ভয়ে মসজিদের লোক আসা কমলে ও আশংকাজনক রয়েছে এখনো। মুসলিমদের এ রোগ হয়না বুঝাচ্ছেন এখনো অনেক মাওলানা। অথচ ঘেষাঘেষি আর সেজদার সময় নাকে দিয়ে শ্বাসের সাথে ভাইরাস ঢুকে যাবে অথবা কপালে নাকে লেগে পরবর্তীতে ঢুকে যাবে শরীরে।
আমি অবশ্য এখন আর কাউকে কোন দোষ দেইনা। তেমন কিছু বলি ও না তাদেরকে, শুধু জামাত থেকে ইমাম, মুয়াজ্জিন অথবা দুুজন মুসল্লি চাই ভলান্টিয়ার হিসেবে করোনা আক্রান্তদের সেবা করার জন্য। যাদের ঈমান এতো শক্ত যে তাদের করোনা হবে না সেই তারাই কেউ রাজী হয়না অর্থাৎ যে বলে মসজিদে গিয়ে গাদাগাদি করেন আর বলে বেড়ান যে মুসলিমদের করোনা হয়না, সে বল আর থাকে না। একজন তো কান্নাই শুরু করে দিচ্ছিলেন। করোনার নাম শুনে তার চেহারা করুন হয়ে গেলো। যুবকরা পালিয়ে গেলো সেবার নাম শুনে। এরচেয়ে অনেক সোজা ঘরে নামাজ আদায় করা।
জেলা লকডাউন এর সিস্টেমটা নিয়ে একটি গল্প বলি আজ। ধরেন, আমার ধারনা কিছু পিরানহা মাছ আছে তিতাস নদীতে। এগুলোকে আলাদা করে রাখা প্রয়োজন কারন এগুলোকে যেখানেই রাখবো সেখানের সব মাছ খেয়ে সাবার করে ফেলবে।তাই ঠিক করলাম এগুলোকে আলাদা করে রাখবো। আর তাই আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উত্তর এবং দক্ষিন প্রান্তেের তিতাস নদীতে বাধ দিয়ে দিলাম যেন এগুলো না বের হতে পারে। আর এরা এখন এর ভিতর যত মাছ আছে এগুলো আরাম করে খাচ্ছে, ঘুরাঘুরি করছে। ডিম পারছে, বাচ্চা ফুটাচ্ছে বংশ বাড়াচ্ছে। আশা করা যায় তিতাস নদির ভান্ডার শেষ হতে বেশীদিন লাগবে না। এতো এতো জনগন কন্ট্রোল করা একা প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব না। মানুষ অসচেতন হওয়ার দরুন কন্ট্রোল করা যাবে না কোনভাবেই। আর এজন্যই আমাদের গেরিলা কৌশল অর্থাৎ ক্লাস্টার লকডাউন এখানে প্রযোজ্য। কৌশলটি সহজ।
১। শুধুমাত্র বাড়ি লকডাউন করা কোনভাবেই গ্রাম নয়।
২। প্রতিবেশীদের সচেতনতা মৃলক কাউন্সেলিং করা যেন তারা এটি মেইনটেইন করে। কেউ আক্রান্ত হলেই এই বাড়িটি লকডাউন করে স্থানীয় জনতার হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা এটি মনিটর করবেন।ঔষুধের প্রয়োজনে ঔষধ ও দিবে। আমাদের সাথে পরামর্শ করে তাদের চিকিৎসা চলবে।
৩। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ১০ জন করে ভলান্টিয়ার সেট করা যারা কাজ করবে মেম্বার কে সাথে নিয়ে।রিপোর্ট করবে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীর কাছে। প্রতি ইউনিয়নে একজন কোঅর্ডিনেটর থাকবে স্বাস্থ্য সহকারী অথবা স্বাস্থ্য পরিদর্শক যে চেয়ারম্যানের কাছে এবং ইউএইচএন্ডএফপিও এর কাছে রিপোর্ট পাঠাবে।
জনসম্পৃক্ততা ছাড়া এ যুদ্ধ জয় করা অসম্ভব। একমাত্র তরুন জনগোষ্ঠীর সহায়তাই পারে কাঙ্খিত সাফল্য এনে দিতে।
যে সকল ইউনিয়নে তরুণ ভলান্টিয়ারগন ভালো কাজ করছে সেখানে কোন চা দোকানের আড্ডা নেই, কোয়ারেন্টাইন নিয়ে কোন ঝামেলা নেই। উপজেলার বাইরে থেকে এলেই সোজা কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছে। শারীরিক সমস্যা হলে ও খোজখবর নিচ্ছে। খাবার না থাকলে জনপ্রতিনিধির কাছে যাচ্ছে।
আমরা হোম কোয়ারেন্টাইনের শুরু থেকেই করছি এভাবে। তাই এ পর্যন্ত আমাদের সাকসেস ভালো। ইটালী,ইংল্যান্ড, স্পেন ফেরত লোকগুলোকে আমি নিজে মনিটর করেছি যেন রেডজোন থেকে আসা লোকগুলো কমিউনিটিতে না মিশতে পারে। স্পাইয়িং করিয়েছি আমার কর্মীদের দিয়ে ওদের উপর।
আমরা প্রথম থেকেই পিপিই দিয়েছি আমার ডাক্তারগনকে। যখন আপনারা নিষেধ করেছিলেন তখনো। আপনারা মনগড়ামতো কথা বলেছিলেন যা অবাস্তব ছিলো। আমরা হিসেব মিলিযেছি যে এগুলো সপ্তাহখানেক চললে ও কিছুদিনের ভিতরে আমরা কেনার জন্য পাবো এবং কিনে নিবো। আমরা আসলেই কিনেছি। রেইনকোট দেখে যা বুঝার বুঝে গিযেছিলাম। এখন অবশ্য কিছু ভালো পিপিই দিয়েছেন বাজে গগলসসহ।
আমরা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ৬ টি মোবাইলে স্বাস্থ্য সেবা সার্ভিস চালু করি যা আপনারা করেছেন একমাস পরে। আউটডোর ডাক্তার কমিয়ে দেই। বেশী পপুলার এবং পরিচিত ডাক্তার আউটডোর থেকে উঠিয়ে নেই ভীড় কমানোর জন্য।প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করতে বলে দেই ইমারজেন্সি ব্যতিত। আপনারা এখানে ও বাধ সাধলেন। মগের মুল্লুকের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করলেন প্রাইভেট চেম্বার খোলার জন্য। অথচ আমরা এগুলো করলাম রোগের বিস্তার কমাতে। সবকিছু জোর করে হয়না। এক্সপার্টরাই চিন্তা করবে কি করনীয় কি নয়। আপনাদের যদি এতো ক্রেজিনেস থাকে তবে আসেন, আমার চেম্বারে আপনাকে ও বসাবো। আমরা যখন মানুষ বাচাতে ব্যর্থ হবো তবে আপনিই নিরাপদ কেমনে থাকবেন দেখেন।
আমাদের মানুষদের জন্য আমাদের চেয়ে বেশী দরদ আপনার নয়। কারণ তাদের সম্মানই আমাদের বেঁচে থাকার ইচ্ছে বাড়ায়। মুক্তিযুদ্ধে পেশা হিসেবে সবচেয়ে বেশী শহীদ হয়েছে ডাক্তার। আর এখনতো এটি যুদ্ধই। এখন প্রয়োজন সকল আউটডোর সার্ভিস বন্ধ করে শুধু জরুরী সার্ভিসগুলো চালু রাখার। প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর জন্য ও একই বিধান।
আমরা এভাবে ভালোই ছিলাম এতোদিন। এখন সমস্যা বেধেছে নারায়নগঞ্জ নরসিংদী নিয়ে। এগুলো এপিসেন্টার হওয়ায় লকডাউন করে দিয়েছে প্রশাসন আগেই। আর এই লকডাউনের ফলে মানুষের ঢল এখন আশেপাশের সব উপজেলায়। আমাদের উপজেলায় এখন সবচেয়ে বেশী মানবঢল।হাজার হাজার মানুষ এ উপজেলায় ঢুকছে। তাদের বক্তব্য তারা ওখানে না খেয়ে মারা যাচ্ছে। লকডাউন হয়েছে ঠিকই তবে মানুষের খাবার সাপ্লাই হচ্ছে অপ্রতুল। শ্রমিক শ্রেনির লোকগুলো যারা ৩ বেলা খেতে পারতো এখন তা বন্ধ। ত্রান পাচ্ছে না কারন তারা ওখানের ভোটার না, কাউকে ঠিকমতো চিনে ও না। খাবার না পেয়ে কান্না করছে শিশুগুলো। তাই জীবন রক্ষায় তারা গ্রামে চলে আসছে। এখানে অভাব থাকতে পারে কিন্তু কেউ না কেউ খাওয়াবে। আত্মীয স্বজন পাড়া প্রতিবেশী কেউ না কেউ খোজখবর রাখবে। জনপ্রতিনিধিদের কাছে ও যাওয়ার সুযোগ থাকছে। শহরে মরে পড়ে থাকলে ও তাদের হদিস কেউ জানবে না। হয়তোবা কপালে কবরও না জুটতে পারে।আমরা আর কিইবা বলতে পারি তাদের! তাদের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নির্ধারিত। জনপ্রতিনিধি, গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন লোকগন তাদের খবর রাখবে।
আমরা লকডাউনের কাছে মাথা নত করে এই লোকগুলোকে আমাদের উপজেলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে আসতে দিই।গেরিলা পদ্ধতি বেছে নিই আমাদের মানুষগুলোকে রক্ষা করার আশায়। ক্লাস্টার হোম কোয়ারেন্টাইন পাহারাসহ মেইনটেইন করা হয়। কে জানে কতটুকু সত্য বলছে লোকগুলো! যুদ্ধের সময় সবচেয়ে বড় আশ্রয় হয় মিথ্যা। সবার আগে হারিয়ে যায় মানবতা। তাই হয়তো খেটে খাওয়া মানুষদের কথা ভালোভাবে চিন্তা না করেই করতে হয় লকডাউন। ঘুরেফিরেই মনে হয় সকল জায়গা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের দরিদ্র ভাইবোনেরা।
আমরা যারা মানুষের সবচেয়ে কাছে থাকি তারা শুধু দেখি আর কষ্ট পাই। আসলেই নিজের কাজটুকু ছাড়া ত্রান দেয়া, মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়ার মতো মৌলিক কাজগুলোই করতে পারি না। আমরা যা করি তা এখনো মৌলিক চাহিদার কোনটাতেই আমরা যুক্ত না থাকায় কিংবা স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মৌলিক চাহিদার অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় সমাজে মানুষের কাছেরজন হযে উঠতে পারিনি এখনো। একবস্তা চাল কারো হাতে দিলে তিনি এবং তার গ্রামবাসীসহ দাতাকে দেবতা মানতে শুরু করেন। আর ডিউটির বাইরে থেকে এসে ও কোন মানুষের জীবন বাঁচালে এটি হয় নিতান্তই দায়িত্ববোধ।
অথচ মানুষজন জানলোই না চালটা সরকারী আর শ্রম ও ভালোবাসা মেশানো ডাক্তারের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাটা একান্তই নিজের।
এটি বায়োলজিক্যাল ওয়ার। এখানের যোদ্ধা আমরা সবাই। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়া বাকি সবাই প্রথম সারির ডিফেন্স। দ্বিতীয় সারির যোদ্ধা হাসপাতাল কর্মী এবং ডাক্তারগন। শেষ সারির যোদ্ধা আইসিইউ র কর্মীরা। ডাক্তারগন এর মূল কমান্ডার এবং জেনারেল। আমরাই জানি কিভাবে সিস্টেমকে সাজালে কাঙ্খিত জয় পাবো, কিভাবে কাজ করলে ল্যাটারাল ড্যামেজ কম হবে। কমান্ডকে কিভাবে ঢেলে সাজালে কোন উচ্চবাচ্য হবে না। কি কি পণ্য কর্মীদেরকে দিলে তাদের প্রাণ ও রক্ষা পাবে আবার জনগনের প্রাণ ও বাঁচবে। কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মক অবস্থায় রেখে রণাঙ্গন ঢেলে সাজালে তাদেরকে ও মারবেন একসময় নিজেরা ও মরবেন। এই কমান্ড ঢেলে সাজানো প্রয়োজন।ডাক্তারদের হাতে এইমূহুর্তে সকল ধরনের ক্ষমতা অর্পন প্রয়োজন। নেতারা এই বিপদেআপদে সামনে না এসে তোরাবোরা গুহায় থেকে ভাষন দেন আর আত্মীয়স্বজনকে সামনে এনে সকল কেনাকাটায় নাক গলান।
প্রথম সারির ডিফেন্সে যারা কাজ করবেন অর্থাৎ ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি জপবেন তাদের আসলে জেনারেল হিসেবে মানায় না। তাই এই যুদ্ধে একমাত্র জেনারেল হবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সকলের জবাবদিহিতা নিবেন তিনিই।
আমরা আসলেই আর পারছি না। ননমেডিকেল কমান্ডে এই যুদ্ধের ময়দানে পরাজিত হচ্ছি আমরা। আমাদের জন্য কোন অনুদান প্রনোদনা চাই না। যে বেতন দেন এটা দিয়েই এখনসহ সামনের দূর্দিনে চলতে পারবো। দয়া করে আমাদের গার্মেন্টস গুলোতে ভালো মানের পিপিই তৈরী করে তাড়াতাড়ি করোনা হাসপাতালগুলোয় দেন, রেইনকোট আর দিয়েন না। মেডিকেল হ্যান্ড গ্লাভস এর মতো প্রোডাক্ট তৈরীর জন্য বসুন্ধরাকে দায়িত্ব দেন। ওদের সব সেটিংস আছে আমার জানা মতে।
নিউরোলজিস্ট প্রফেসর কাজী দীন মোহাম্মদ কিংবা প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম স্যারের মতো কাউকে এনে মন্ত্রনালয়ে বসান। দেখবেন সুন্দরভাবে সব ম্যানেজ হয়ে যাবে। এই জাতীয় দূর্যোগে অন্তত দক্ষ লোক বসান। আমাদের ভাই,বন্ধুরা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে সেফটির অভাবে। যাদেরকেই দিয়েছেন দেশের মানুষ রক্ষার দায়িত্ব সেই তারাই ননমেডিকেল গ্রেডেড পিপিই, মিষ্টির দোকানের গ্লাভস, বস্তির শিশুদের যোগ্য ৩০ টাকার গগলস ননমেডিকস্ গ্রেডেড মাস্ক সাপ্লাই দিলো। অথচ সরকার এখানে টাকা ঢেলেছে উদার হাতে। যারা এগুলো সাপ্লাই করেছেন তারাও বাঙালী জাতীয়তাবাদের ধারক। কি সাধারনভাবেই না তারা আমাদের জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়ে নিজেরা পকেটে টাকা ভরছে। অথচ তারা জানেই না যে এর কারনেই তারা হয়তো কাফনের কাপড় ও পাবে না। যে যার মতো ইনকোওর্ডিনেশন অবস্থায় ভালো কাজ বের হবে না। আমাদের দিয়ে বাজে কোয়ালিটির অস্ত্র হাতে দিযে ফোর্স করে কাজে পাঠালে এতে করে জনগনের ও লাভ হবে না, স্বাস্থ্যকর্মীরা মারা পরবে সরকারের ও আর্থিক ক্ষতি হবে বিশাল যে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে হয়তোবা যুগ পেরিয়ে যাবে।
লেখকঃ ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বাঞ্ছারামপুর