প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩ মে ২০২০, রবিবার
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার পৌরসভার পূর্ব জোয়ারা গ্রামে পরিবারের সাথে বসবাস করে শিশু আবির। বেশ কিছুদিন জ্বর থাকার কারনে করোনা সন্দেহে গত ১৭ এপ্রিল শিশু আবিরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ২১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাতে ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এ করোনা শনাক্ত হওয়ার পর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বয়সী এবং একই সাথে সুস্থ হওয়া করোনা আক্রান্ত শিশু আবির। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কাছে যেখানে হার মানছে অসংখ্য কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ, সেখানে দশমাসের এই শিশু সুস্থ হওয়ার বিষয়টি নতুন আশা জাগাচ্ছে সবার মধ্যে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গোলাম মোস্তফা জানান, ২২ এপ্রিল শিশুটিকে ভর্তি করানোর পর তার জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসায় শিশুটি কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দফা পরীক্ষা করে তার শরীরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নেগেটিভ ফলাফল আসে। শিশু আবিরের সাথে তার মা ছিলেন, তাই করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির কারনে তার মায়ের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত শুক্রবার মা-ছেলের নেগেটিভ আসে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ চেকআপ করে শিশুটিকে পুরোপুরি সুস্থ জানান।
তিনি আরও বলেন, শিশুরা বিভিন্ন জটিলতায় ভোগেন। শিশুদের সবসময় নানা রকম সমস্যা থাকে। এসবের মধ্যে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া চিকিৎসকদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। তারপরও আবিরের মতো শিশু রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠবেন এটাই সবার প্রত্যাশা। গতকাল শনিবার দুপুরে তাদেরকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। সেই সাথে আগামী ১৪ দিন তাদের হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। আবিরসহ আরও ২ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এ নিয়ে করোনার চিকিৎসা দেওয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোট ১৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো.আবদুর রবের নেতৃত্বে হাসপাতালটিতে করোনা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ যুক্ত করা হয়েছে এতে করোনা চিকিৎসায় স্বস্তি মিলছে। ১০ মাস বয়সী আবিরকে নিয়ে আমরা সতর্ক ছিলাম। আমাদের চিকিৎসকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি সাধারন মানুষের উদ্দেশ্য বলেন, ‘করোনা নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। বয়স্ক এবং যাদের জটিল রোগ আছে তাদের জন্য করোনা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ভাইরাসটি ছড়ায় মানুষ থেকে মানুষ। তাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। হাঁচি-কাশির জন্যও মেনে চলতে হবে সামাজিক শিষ্ঠাচার।
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলভিয়া মীম