প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৯ আগস্ট, ২০২০, শনিবার
প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার
একাদশ ব্যাচ,
শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম), বরিশাল
পৃথিবীর জীবনকে আমরা স্বার্থপরের জীবন বলি৷ কখনো কখনো তা বিশেষভাবে টের পাওয়া যায়, আর এই করোনা পরিস্থিতি তা সবাইকে কম বেশি মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ যিনি এখান থেকে হাশরের ময়দানের একটা শিক্ষা নিচ্ছেন তিনি জ্ঞানী।
আল কুরআনের দুটো জায়গা তুলে ধরি, খুব প্রিয় আয়াতসমূহ:
১) আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির ব্যাপারে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে সেসব বুদ্ধিমান লোকদের জন্যে অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে; যারা উঠতে, বসতে, শুতে – সকল অবস্থায়ই খোদাকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি ও সংগঠন সম্পর্কে চিন্তা ও গবেষণা করে, (তারা স্বত:স্ফুর্তভাবে বলে উঠে) খোদা এসব কিছু তুমি অর্থহীন ও উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি কর নি৷ তুমি উদ্দেশ্যহীন বাতুলতা হতে পবিত্র৷ অতএব হে খোদা, দোজখের আজাব হতে আমাদের বাঁচাও৷
(সূরা আলে – ইমরান ১৯০-১৯১ আয়াত )
এই আয়াতগুলির অর্থ খুবই সুস্পষ্ট৷ উঠতে বসতে চলতে ফিরতে সৃষ্টিকর্তার বিস্ময়কর সৃষ্টির কথা ভেবে ভেবে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে, অনুগত হয়ে তৃপ্তির জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে আহবান করা হয়েছে৷
২) এই লোকেরা উহাকে দূরবর্তী মনে করে, আর আমরা উহাকে নিকটে দেখিতে পাইতেছি৷ সেই আজাব হইবে সেইদিন যেদিন আকাশমণ্ডল বিগলিত রৌপ্যের মতো হইয়া যাইবে৷ আর পর্বতগুলি রং বেরঙের ধুনা পশমের মতো হইয়া যাইবে৷ আর কোন প্রাণের বন্ধু নিজের প্রাণের বন্ধুকেও জিজ্ঞাসা করিবে না৷ অথচ তাহারা পরস্পর প্রদর্শিত হইবে৷ অপরাধী লোক চাহিবে, সেইদিনের আজাব হইতে রক্ষা পাইবার জন্য নিজের সন্তান, স্ত্রী, ভাই- তাহাকে আশ্রয়দানকারী নিকটবর্তী পরিবারকে এবং ভূ-পৃষ্ঠের সমস্ত লোককে বিনিময়ে দিয়ে দিতে, যেন এই উপায়টি তাহাকে নিষ্কৃতি দিতে পারে৷
(সূরা মা’রিজ ৬ – ১৪ আয়াত)
এক কথায় হাশরের ময়দানে শেষ বিচারের দিন সকল প্রিয় মানুষ ও বস্তুকে দিয়ে দিতে চাইব আমরা, নিজের মুক্তির এবং পরিত্রানের জন্য৷ কেউ কারও বিন্দু মাত্র উপকারে আসব না – যার যার অর্জন তার তার।
কি করুণ – কি করুণ হবে সে দিনটি! তার আলামত এই করোনাকালীন সময়ে কি কিছুটা আমাদের চারপাশে পরিলক্ষিত হচ্ছে না?