প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৯ জুলাই, ২০২০, রবিবার
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ
মেয়েটি ডাক্তার বিয়ে করেছিল নিজ পছন্দে, তাই বাবা বাড়ি থেকে ত্যাজ্য। যেই স্বপ্নের অঞ্জন চোখে মেখে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিল, সেই মাধুর্য্য মেহেদির রং মিলানোর আগেই গায়ে হাত তোলার মাধ্যমে শেষ হয়েছিলো। শ্বশুর বাড়ির শাসন আর নির্যাতন ছিল নিত্যনৈমত্তিক।
এরপর সেই পুরাতন কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প۔
ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এমনিই এখন বিশ্বব্যাপী তুঙ্গে। এমন সময় কয়দিন আগে রাতে মেয়েটাকে শ্বাশুড়ি বাড়ি ঢুকতে দেয় নি। কারণ সে নাকি ইচ্ছা করে রাতে ডিউটি নিয়ে অসভ্যতামি করে এসেছে।
মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে আমাকে প্রশ্ন করলো, “আমাকে বাপে খেদানো মা’য়ে তাড়ানো বলে, যার জন্য সবাইকে ছাড়লাম সেই আমাকে নিজের মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে চরিত্রহীন বলে। আপনি বলেন আমার কি বেঁচে থাকবার আর কোন কারণ আছে?” মেয়েটি যখন এই প্রশ্নটি করলো তখন তার চিন্তা চেতনায় গোটা দুনিয়াতে কেবল অস্তিত্ব ছিল তার জামাই আর শ্বশুর বাড়ির। সে ভুলে গিয়েছিলো যে, এই পৃথিবীতে কিন্তু সে’ও থাকে আবার তাঁর অনেক প্রিয় মানুষও থাকে, যাঁদের কাছে সে অনেক আদরের।
আসলে কিন্তু মেয়েটি সুযোগ দিয়েছিলো বলেই ওরা দিনের পর দিন এতো অসম্মান মেয়েটাকে করতে পারলো। এই টক্সিক রিলেশনশিপগুলির যাতনা কি আদৌতেই এতদিন বয়ে বেড়াবার কোন দরকার ছিল, যেখানে বেলাশেষে বেঁচে থাকাটাই বোঝা মনে হয়? বাইরের কেউ বিষ দিলেই কি আমি বিষ খাবো?
মানুষ মাত্রই ভুল করে, আবার মানুষেরই তা শুধরে নেবার ক্যাপাসিটি আছে। ওই যে একটা গান ছিল না, “তোলো ছিন্ন বীনা, বাঁধ নতুন সুরে”।
প্রশ্ন হলো আমরা কি আমাদের নতুনের মাঝে চিরপুরাতন সেই ‘ভিতরের আমি’-কে নতুন সুর শোনার সম্মানজনক সুযোগ করে দেই? যাঁরা অন্যকে যে যেমন আছেন, সেভাবেই সন্মান করেন; তাদের জন্য অনেক ভালোবাসা।
এছাড়া অন্যান্য কাউন্সিলিং ও সাইকোথেরাপি সম্পর্কিত তথ্য জানতে যোগাযোগ করুন ম্যাডামের নিম্নোক্ত লিঙ্কে দেওয়া ফেসবুক গ্রুপে।
https://www.facebook.com/groups/357986944721317/?ref