প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, শুক্রবার
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর,
সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার,
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ।
একই কাজ নিজের মেয়ের জন্য যেটা ঠিক ছেলের বউ করলে সেটাই দোষ। মেয়ের জামাই একটু মুচকি হেসে তাকালেও লক্ষ্মী ছেলে আর ছেলের বউ যতই যাই করুক তাবিজ করে ছেলেটাকে বশ করেছে। মেয়ের জামাই আসলে মাছের মাথা, ছেলের বউ এর পাতে লেজও জোটে না। মেয়ে চাকরি করলে শাবাশী আর ছেলের বউ চাকরি করলে বানভাসি। মেয়ের বাবা- মা বেয়াদব কিছু শিখায় নাই, ছেলের বাবা- মা কিন্তু আদব, সস্তা ছেলে মানুষ করে নাই। এই আচরণ কিন্তু দ্বিচারিতা। সহজ ভাষায় বললে যিনি করছেন তিনি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।
এরপর সেই কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প-
প্রশ্ন- ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কি?
উত্তর- ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হল একজন মানুষের
মনস্তাত্ত্বিক চয়েজ, এটা সেই সদর দরজা যা
দিয়ে সে টক্সিক রিলেশনশিপে ঢুকে।
এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
১. ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ব্যক্তিকে প্রথমে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিন কোথায় কোথায় তিনি ২ জনের সাথে এমন দুইরকম আচরণ করছেন।
২. এই রোগ ধরিয়ে দেওয়াটা দৃঢ়তা ও নমনীয়তার সাথে করতে হবে যাতে তিনি অসম্মানিত বোধ না করেন।
৩. তিনি তার এহেন আচরণের পক্ষে একের পর এক যুক্তি উত্থাপন করবেন, প্রয়োজনে যিনি কনফ্রন্ট করছেন বা তার ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণের দিকে আঙ্গুল তুলছেন তাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করবার চেষ্টা করবেন যুক্তি দিয়ে, রাগ দেখিয়ে, কান্না করে। যেমন বলবেন,
“আমি তোর জন্য এতো কিছু করেছি আর এখন তুই অমুকের পক্ষ নিচ্ছিস! নিমকহারাম!”
তখন দৃঢ়তার সাথে আপনার জন্য করা তার সকল ভালো কাজের প্রশংসা করে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলবেন,
“জি, আমি স্বীকার করছি আপনার সব অবদান, আমি কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি, আপনি অনেক করেছেন আমার জন্য আর তাই আপনার সেই কোয়ালিটির প্রতি আস্থা রেখেই বলছি এখানে আপনি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণ করছেন। আমি জানি আপনি চাইলেই এটা শুধরে নিতে পারেন।”
৪. তাকে আশ্বস্ত করুন যে, আপনি যেকোনো পরিস্থিতিতেই তাকে ভালোবাসেন, তার পাশে আছেন, থাকবেন এবং তিনি তার ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ত্যাগ করলে আপনার কাছে তার সম্মান কমবে না বরং আরও বাড়বে।
৫. এভাবে প্রতিটি ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের ঘটনায় ভদ্রভাবে প্রতিবাদ করুন দেখবেন ক্রমেই কমে এসেছে। আর যদি না কমে তবে কিন্তু টক্সিক রিলেশনশিপের বিষের ছোবলে উভয়কেই পুড়তে হবে।