কাঠমন্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ‘বিএস-২১১’ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত টাঙ্গাইলের কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ছাত্রী শ্রেয়া ঝাঁ’র স্মরণে শোক পালন করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তার নেপালী সহপাঠী ও কুমুদিনীর শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই শোক র্যালীর আয়োজন করা হয়। র্যালীটি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমুদিনী হাসপাতাল রোডে মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে শ্রেয়ার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এছাড়া রাতে তার স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
শ্রেয়া ঝাঁ(২৫) নেপালের মাহোত্রারী সানফা-৩ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতার নাম লাকসমান ঝাঁ ও মাতার নাম মাধুরী ঝাঁ। তিনি কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে পঞ্চম বর্ষের এমবিবিএস কোর্সের ছাত্রী ছিলেন। শ্রেয়ার সহপাঠী পিও কর্মকার ও তার স্বদেশী নেপালী শিক্ষার্থীরা জানান, শ্রেয়া ঝাঁ সদা হাসোজ্জ্বল থাকতো। সবার সাথে মিলেমিশে থাকতো এবং সে আমাদের খুব ভাল একজন বন্ধু ছিল।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানা যায়, গত ১১ মার্চ রবিবার মেডিকেল কলেজের টার্ম পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময় নেপাল থেকে শ্রেয়া ঝা’র দাদার মৃত্যু সংবাদ আসে। সংবাদ পেয়ে সে অধ্যক্ষ বরাবর ছুটির আবেদন করে।
ছুটি মঞ্জুর হলে পরদিন, ১২ মার্চ সোমবার সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সে নেপালের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া দুইটার দিকে কাঠমন্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রানওয়েতে অবতরণের সময় ভুল বার্তা দেয়ার কারণে পাশের একটি ফুটবল মাঠে গিয়ে বিমানটি ভূপাতিত হয়ে আগুন লেগে যায়। এই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।
কুমুদিনী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল হালিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, শ্রেয়া ঝাঁ অনেক মেধাবী ছাত্রী ও শান্তশিষ্ট স্বভাবের মেয়ে ছিল। আমি তার বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি।
এদিকে, নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের মেধাবী ছাত্রী শ্রেয়া ঝাঁর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন কুমুদিনী ওযেলফেয়ার ট্র্যাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান শ্রী রাজিব প্রসাদ সাহা, কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্র্যাস্টের শিক্ষা পরিচালক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল প্রতিভা মুৎসুদ্দি, পরিচালক শ্রী মতি সাহা, পরিচালক মিসেস সম্পা সাহা ও কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. দুলাল চন্দ্র পোদ্দার।
সংবাদদাতা:
হিমিকা সরকার, (৫ম বর্ষ) কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ