প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৩ মে, ২০২০, বুধবার
ডা. সিনহা মনসুর, এমডি
এনেস্থেসিওলজিস্ট, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার
ইংরেজীতে যেটাকে বলে ‘Mess’ বাংলায় সেটাকে বলে ‘হ-য-ব-র-ল’। ঠিক এই অবস্থাটাই তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে। কালজয়ী নাট্যকার শেক্সপিয়র বলেছিলেন, ‘To be or not be, that is the question.’ আর বাংলাদেশের হাসপাতাল ব্যবস্থাপকেরা বলছেন, ‘Covid or Non-Covid that is the question!’
এই Question-এর পাল্লায় পড়ে রোগী ও তার নিকট আত্মীয়দের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। সরকারি এবং বেসরকারি দুই সেক্টরে একই অবস্থা। কোভিড হাসপাতাল থেকে নন-কোভিড হাসপাতালে অথবা নন-কোভিড হাসপাতাল থেকে কোভিড হাসপাতালে ধরনা দিচ্ছেন মরণাপন্ন রোগী ও তার আত্মীয় স্বজনেরা। কেউই তাদের গ্রহণ করছেন না। দিনশেষে দোষী হচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন দোষটা কার? চিকিৎসকের না ব্যবস্থাপনার? চিকিৎসক তো ওই হাসপাতালের চাকুরীজীবি। হাসপাতালের পলিসি আর প্রটোকল যদি আপনাকে ভর্তির অনুমতি না দেয় তাহলে চিকিৎসক কি করবেন? তিনি তো ভর্তির মালিক নন। তিনি চিকিৎসা দেবেন। চিকিৎসা দেওয়ার আগে আপনাকে হাসপাতালে জায়গা দিতে হবে। ওটা হাসপাতাল ব্যবস্থাপকের এখতিয়ার।
আমেরিকায় কোভিড নন-কোভিড হাসপাতাল বলে আলাদা কিছু নেই। একই হাসপাতালে কোভিড নন-কোভিড ইউনিট রয়েছে। ওখানে সব ধরনের রোগীই আসছেন। মরণাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। একই হাসপাতালে কিডনী রোগীর ডায়ালাইসিস হচ্ছে, হার্টের রোগীর জরুরী চিকিৎসা হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটারে জরুরী অপারেশন হচ্ছে। কেননা এখানে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পি.পি.ই নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং পলিসি আর প্রটোকল ওভাবেই করা হয়েছে।
বাংলাদেশেও কোভিড নন-কোভিড কনসেপ্ট তুলে দেওয়া উচিত। নিশ্চিত করা উচিত চিকিৎসক কর্মীদের পি.পি.ই। তাহলেই আমরা অনভিপ্রেত মৃত্যুগুলো এড়াতে পারবো। আর দিনশেষে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দিতে পারবো সাধুবাদ।