প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৯ জুন, ২০২০, মঙ্গলবার
ডা. আজিজ রহমান
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ-
করোনাভাইরাস টেস্ট করালে যদি রেজাল্ট পজিটিভ আসে, তখন আশেপাশের লোকজন কী বলবে? আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব কী মনে করবে? এ জাতীয় চিন্তা এখন কাজ করছে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে। নিজের শারীরিক অসুস্থতার তুলনায় লোকজন কী ভাববে- এটাই কিন্তু এখন মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা জানা শুধু মুশকিলই নয়, এ ধরনের চিন্তা চেতনার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাসের বিস্তার হচ্ছে। টেস্ট তো করা হচ্ছেই না, উপসর্গ থাকলেও বাসায় থাকার পরিবর্তে আক্রান্ত মানুষজন মিশে যাচ্ছে সবার সাথে। আবার যদি কেউ জেনে যায় কোন আক্রান্ত রোগীর কথা, তাহলে এক ধরনের বৈষম্য কাজ করছে; অনেকটা সামাজিকভাবে একঘরে করে দেওয়ার মতো।
ভুলে গেলে চলবে না, কাল কিন্তু আপনি এবং আপনার পরিবার আক্রান্ত হতে পারেন। তখন নিজেদেরকে কিভাবে দেখতে চান? করোনাভাইরাস কোন গোপন রোগ নয়। এটি এইডস নয় যে আপনাকে রাখঢাক করতে হবে। আর আপনি যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই থাকেন, তাহলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ ৯৫% ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ থাকে ও স্বাভাবিক চিকিৎসাতেই সেটি ভালো হয়ে যায়।
যদি কোন উপসর্গ থাকে-
- বাসায় আলাদাভাবে থাকুন।
- হটলাইনে যোগাযোগ করে জেনে নিন টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তা।
- নির্দেশ অনুযায়ী টেস্ট করান।
- জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে, মাস্ক ব্যবহার করুন ও ১.৫ মিটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
- হাত সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
- নিজেদের কমনসেন্স ব্যবহার করুন।
- বেশি অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
অবশ্য টেস্ট করার বিড়ম্বনাও আছে, এ ব্যাপারে সরকার ও কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এই বিপদের সময় সামাজিক নিন্দা ও সামাজিক বৈষম্য নয়, প্রয়োজন সবাই এক হয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা।