১২ এপ্রিল ২০২০: এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৬ লক্ষ মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং এক লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই মৃত্যু বরণ করেছেন। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই তাই বলে বড় বড় ঔষধ তৈরির প্রতিষ্ঠনগুলো বসে নেই।
কমপক্ষে ১০০ টি পূর্বে আবিস্কৃত ঔষধ নিয়ে দিনরাত চলছে কোভিড-১৯ রোগ নিরাময় বা প্রতিরোধী গবেষণা। সেই সাথে চিকিৎসার জন্য নতুন ঔষধ এবং প্রতিষেধক আবিষ্কারের কাজও চলছে অবিরাম।
এ সময়ের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় চিকিৎসা পরিকল্পনা যেগুলো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে সেগুলোর একটি তালিকা শেয়ার করছি।
১। রেমডিসেভিরঃ ক্যালিফোর্নিয়ার জৈবপ্রযুক্তিবিদ গিলিয়েড পূর্বে ইবোলা রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত রেমডিসেভির নামক এ্যন্টিভাইরাল ঔষধ কে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য নতুনভাবে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রেমডিসেভিরকে এই মুহূর্তে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় চিকিৎসা হিসেবে বিবেচনা করছে। বর্তমানে চায়না, দক্ষিন কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলমান রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ট্রায়ালের ফলাফল বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিৎ। আশা করা যাচ্ছে প্রথম ফলাফলটি চায়না থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে।
২। কালেট্রাঃ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় কালেট্রা অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, যা পূর্বে এইচআইভি এইডসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়েছে। ১৮ই মার্চ, নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে কালেট্রা ব্যবহারে বিশেষ ভাল কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। যদিও একই দিনেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানায় কালেট্রা, রেমডিসেভির, ক্লোরোকুইন, ইমিউনোমডিউলেটর-বেটা নিয়ে তারা কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য নতুনভাবে একটি গ্লোবাল/বৈশ্বিক গবেষণা করবেন ।
৩। এ্যক্টেমরা এবং কেভজারাঃ বাতের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত এই দুটি ঔষধ বর্তমানে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। রোশের তৈরি এ্যক্টেমরা এবং সানোফি এবং রেগেনেরন এর কেভজারা দুটো ঔষধই এ্যন্টি ইন্টারলিউকিন-৬ শ্রেনির ঔষধ।এ ঔষধ দুটি রোগীর ফুসফুসের অতিরিক্ত প্রদাহ বন্ধ করে ফুসফুসকে সচল রাখে।দুটো ঔষধ নিয়েই দেরীতে হলেও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
৪। কনভালসেন্টস প্লাজমাঃ সুস্থ্য হয়ে ওঠা কোভিড-১৯ রোগীদের শরীর থেকে নেওয়া রক্তের প্লাজমা অসুস্থ রোগীর শরীরে প্রবেশ করে এই চিকিৎসা করা হচ্ছে। যেহেতু সেরে ওঠা রোগীর দেহে কোভিড-১৯ প্রতিরোধি অ্যন্টিবডি তৈরি হয়েছে তাই এই প্রক্রিয়াটি অসুস্থ রোগীকে সেরে উঠতে সাহায্য করছে। সাম্প্রতিক কালে করা দুইটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে বলা হয়েছে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কনভালসেন্টস প্লাজমার ব্যবহার খুবই উপযোগী।
৫। ক্লোরোকুইনঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারনায় মেলেরিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রোক্লোরোকুইন কোভিড-১৯ প্রতিরোধক চিকিৎসায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যদিও ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রোক্লোরোকুইনঃ কোনটির ব্যবহারই কোভিড-১৯ চিকিৎসায় তেমন কোন আশাব্যঞ্জক ফলাফলা দেয়নি।
৬। এ্যভিগানঃ চায়নার একটি ক্লিনিকেল ট্রায়ালে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় এ্যভিগানের ব্যবহার চমৎকার ফলাফল দিয়েছে। ট্রায়ালে দেখা গেছে আরবিডোল এবং এ্যভিগানের মধ্যে যাদের উপর এ্যভিগান প্রয়োগ করা হয়েছে তারা আরবিডোল পেয়েছে এমন রোগীর ১ সপ্তাহ আগে সেরে উঠেছেন। এই ঔষধটি আমেরিকাতে অনুমোদিত নয়।
এছাড়াও টিকেকে-৮৮৮, অ্যন্টিবডি চিকিৎসা ছাড়াও আরও শতাধিক ঔষধ নিয়ে গবেষণা চলছে।
বিজনেস ইনসাইডার
৭ এপ্রিল, Andrew Dunn
অনুবাদঃ ডাঃ মোঃ রিজওয়ানুল করিম
রাইয়ান আমজাদ