প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
১৩ মে, ২০২০, বুধবার
লেখাঃ ডা. ইমরান কায়েস
এম আর সি এস
ক্লিনিক্যাল ফেলো (সার্জারি)
চেলসা এন্ড ওয়েস্টমিনিস্টার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ট্রাস্ট,
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
করোনায় সম্ভবত সবচেয়ে বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শুরুর দিকে টেস্ট না করা, লুকোচুরি করা, প্রবাসীদের অবাধে দেশে ছড়িয়ে পড়তে দেওয়া। স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তুতিহীনতা। কোনরকম ডিটেইল প্ল্যানিং করতে পারার মতো স্মার্টনেস না থাকা।
একটা ভয়ংকর এলোমেলো শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বের হওয়া হাজার হাজার কুসংস্কারাচ্ছন্ন গণ্ডমূর্খ মানুষের বিপজ্জনক আচরণ। একই তীব্র প্রতিযোগীতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থার কল্যাণে ইনসেন্সেটিভ ভাবে বড় হওয়া ডাক্তার মশাই, হামবড়া অফিসার সব মিলে একটা টাইম বোম এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশেটাতে তৈরি হয়েছে।
দেশকে ঠিক ঠাক রাখার জন্য দুইটা ব্যবস্থা খুব জরুরি। তা হল-
১. শিক্ষা ব্যবস্থা
২. স্বাস্থ্য
দুটোর একটাতেও আমাদের কোন মনোযোগ ছিল না। একটাকেও আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি।
ইচ্ছাই ছিল না, পারবো কী!
বাজেটের সময় এ দুটোই থাকে পিছিয়ে। আমরা পয়সা ঢালি সমস্ত চকমকা কান্ডকারখানার পেছনে, যেখানে আছে ইন্সট্যান্ট শো অফ। জাতি গড়ে তোলার পেছনে আমাদের কোন মনযোগ নাই। আমাদের মনযোগ বড় লোক হওয়ায়৷ অশিক্ষিত থেকে বড়বড় বিল্ডিং এর মালিক হওয়ায়!
এ যাত্রায় বেঁচে গেলে দেশের মূল সমস্যায় চোখ দিবেন। একবার ভাববেন, একটা হাইফাই বিল্ডিং এর চেয়ে সরকারি হাসপাতালের একটা হাই ফাই আইসিউ গড়ে তোলা কতটা জরুরি! চকমকা অফিসের থেকে, চকমকা প্রাইমারী স্কুলের প্রয়োজনীয়তা কতটা বেশি; তা নিয়েও ভাববেন। একজন বিসিএস পাশ করা অফিসার বা এমপি মন্ত্রীর চেয়ে একজন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের বেতন এবং মর্যাদা দুটোই বাড়ানো প্রয়োজন। ভাববেন, একজন ভালো ছাত্রের চেয়ে দরদী, সত্য বলা, মানুষের জন্য কাজ করা ছাত্র – আমাদের দেশের জন্য কতটা প্রয়োজন! অঙ্ক-কেমিস্ট্রিতে নাম্বার বেশি পেয়ে অহংকারী হয়ে উঠলে, ঘুষ দুর্নীতিতে গেলে দেশের লাভটা কী? উন্নতি শব্দটা আমরা ভুল জায়গায়, ভুল ভাবে ব্যবহার করেছি এতদিন।
জিনিসটা একটু মাথায় রাখবেন।