৩ এপ্রিল ২০২০: কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে থেমে নেই ময়মনসিংহ বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থা। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের আউটডোর সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিদিন খোলা আছে। অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি জরুরি ২৪ ঘন্টা খোলা আছে সাধারণ দিনের মতই। সারাদেশে চলমান করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মাঝেও ইমার্জেন্সী কোন রোগী ভর্তি বন্ধ ছিলো না। ওয়ান স্টপ সার্ভিসটিও নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘন্টা খোলা রয়েছে।
এদিকে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্ট রোগীর জন্য এস কে হাসপাতালের আউটডোর সরকারি আদেশ অনুক্রমে প্রতিদিন খোলা রয়েছে। কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য ২৪ ঘন্টা আইসোলেশন ওয়ার্ড আছে এস কে হাসপাতালে। এখানে আই সি ইউ সুবিধাসহ চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন চিকিৎসকরা। কার্ডিওলজি বিভাগসহ সকল ইমার্জেন্সী ওয়ার্ড যেমন গাইনী, শিশু বিভাগ, NICU বরাবরের মতই চিকিৎসা দিয়ে চলেছে সারাক্ষণ। দুর্ঘটনার রোগীদের জন্য ক্যাজুয়াল্টি বিভাগ ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি সংক্রমণ রোগের জন্য এস কে হাসপাতালে সাধারণ সময়ের মতই চিকিৎসা সেবা চলমান।
তবে খুব সাধারণ অসুস্থতা যেমন গায়ে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, সাধারণ কোমর ব্যথা, এসিডিটি, চুলকানি, হাত পা জ্বালাপোড়া, এবং শুধুমাত্র ওষুধের জন্য হাসপাতালে ভীড় করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। রুটিন চিকিৎসা যেমন সাধারণ টিউমার অপারেশন, সাধারণ টনসিলের অপারেশন, সাধারন পিত্তথলীর পাথর, সাধারণ অর্থপেডিক অপারেশন, মেডিসিনের যেসকল চিকিৎসা বাসায় সম্ভব সেগুলো পরামর্শ দিয়ে বাসায় অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকল চিকিৎসকের জন্য পিপিই নিশ্চিত করেছেন, সকল নার্সদের পিপিই নিশ্চিত করেছেন। অন্যান্য কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরও কাজের ধরন অনুযায়ী পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। যথেষ্ট হ্যান্ডরাব ও স্যানিটাইজার সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম আয়ের কর্মচারীদের বিশেষ পুষ্টির জন্য ব্যাবস্থাও নেওয়া হয়েছে। স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে (Rapid Response Team)। টেলিফোনে চিকিৎসা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করা হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরে জীবানু নাশক কর্মকান্ড চলছে, হাতধোয়ার বেসিন সাবানসহ দেয়া হয়েছে, ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে চত্বর জীবানুমুক্ত রাখার চেস্টা করা হচ্ছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ডিসইনফেক্টেন্ট ছিটানো হচ্ছে। সচেতনতামূলক মাইকিং চলছে, ব্যানার লাগানো হয়েছে। সকলের মাস্ক পরা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার যথেষ্ট চেষ্টা চলছে। ডায়াবেটিস ও হরমোন ক্লিনিক বরাবরের মত খোলা আছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাননীয় পরিচালক মহোদয় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসির উদ্দিন আহমেদ সকল বিষয় তদারকি করছেন। কে করোনা ভাইরাসের বহনকারী, তা কেউ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবে না। তাই জরুরী কার্য ব্যতীত হাসপাতাল এড়িয়ে চলার আহ্বান করা হচ্ছে সকলকে। হাসপাতাল এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। সকল পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা কর্মচারীর প্রয়োজন জনগণের সাহায্য সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা জনসেবায় নিয়োজিত।
তথ্যসূত্র: ডা.ওয়াসিম (কার্ডিওলজিস্ট)
নিজস্ব প্রতিবেদক/ওয়াসিফ হোসেন