প্ল্যাটফর্ম সাহিত্য সপ্তাহ -৩০
” কোরবান : ত্যাগ এবং ভালোবাসা “
লেখকঃ
ডা: মীর মোহাম্মদ আবরার।
৪র্থ ব্যাচ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ।
গরুরে খাওয়াইয়া, আদর কইরা ঘরে ফিরছি, গলির মুখে এক ছোটভাই এর সাথে দেখা,জিগাইলো গরু নিসি কিনা।
মোবাইল বের করে দেখাইলাম গরু।
পাশে এক লোক দাঁড়িয়ে ছিল,দেখতে চাইলো তারেও দেখাইলাম।
এরপর জিগাইলো কতো হইসে, হাটে দাম এখন কেমন।
দাম বললাম, হাটে দাম কমতেসে যদ্দুর মনে হইল।
তারপর উনি বললেন ভাই এই এলাকায় নতুন আসছি,কারো সাথে তেমন পরিচয় নাই, গরু দিতে চাচ্ছি বাট বাজেট তেমন একটা নাই।
বাসায় বউ আছে আর ছোট বাচ্চা আছে দুইটা, শরীক পেলে এক নামে দিয়ে দিতাম।
মাথায় হুট করে প্রশ্ন আসলো শরীক হতে চাচ্ছেন?
উনি এবার আগ্রহ নিয়েই বলল ভাই হতে পারলে তো ভালো হয়।
একজনের সাথে কথা বলসিলাম ওরা ৩ জন মিলে দিচ্ছে চাইসিলাম একনাম রাখতে, ওরা গরু নিয়ে ফেলসে আমার সাথে আর যোগাযোগও করে নাই এখন পড়সি বিপদে৷
বললাম ভাই একটু ওয়েট করেন, আমার জ্যাঠাত ভাই এর সাথে আগে কথা বলি।
দিলাম ভাই রে ফোন,ও কয় আম্মাদের সাথে কথা বল।
দিলাম আম্মারে ফোন,আম্মা কয় ওয়েট কর, দিল জ্যাঠিম্মারে ফোন।
এরপর কল করে বলল, উনারে নিয়ে আয় কথা বলি,ভাইয়াও আসলো। গরুও পছন্দ হইল উনার।
শরীক হয়ে গেল।
ছবি তুলে সাথে সাথেই বউরে পাঠাই দিল,বাচ্চাদের দেখানোর জন্য।
ওই দুইটা বাচ্চার কথা মাথায় ঘুরতেসে, একসময় আমরাও বসে থাকতাম কখন আমাদের হাম্বা আসবে, অন্যদের হাম্বা দেখে মন খারাপ হতো, আমাদের কখন আসবে, কেমন হবে,আর আসার পর সারাক্ষন গরু নিয়ে পড়ে থাকতাম, এটা সেটা,গরুর খাওয়া, এই সেই, শীতকাল হলে গরুরে বস্তা পড়িয়ে রাখা, ঠান্ডা লাগছে কিনা দেখা।
কত্তো স্মৃতি কত্তো শখ।
এই বাচ্চা দুইটা মোবাইলে আপাতত দেখছে, রাত হয়ে গেছে দেখে ওদের বাবা বের করে নাই, আজকে সারারাত হয়তো বারবার চেক করবে, জুম করবে, দেখবে গরুটাকে আর অপেক্ষা করবে কখন সকাল হবে, ধরে দেখবে নিজেদের ইয়া বড় হাম্বাটাকে।
কোরবান, ত্যাগ ভালোবাসার গল্প।