ক্যান্সার প্রতিষেধক একজন রোগীর ক্যান্সার দূর করতে প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। এই ভ্যাক্সিন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
মানবদেহের রোগ প্রতিরোধের অতন্দ্র প্রহরী টি-লি্মফোসাইট। কিন্তু, যখনই ক্যান্সার এর প্রশ্ন আসে, ব্যার্থ এই প্রধান কণিকাসহ অন্যান্য সকল শ্বেত-কণিকা। এই কণিকাদের কোষ-পৃথকিকরণের প্রশিক্ষণ কিভাবে দেওয়া যায় এই চিন্তায় যুগ যুগ ধরে গবেষকদের ঘুম হারাম ছিল। ক্যান্সার ছিল প্রতিষেধক গবেষণায় এক দুঃস্বপ্নের নাম।
ক্যান্সার কোষের যে প্রোটিন, সুস্থ্য কোষেরও সেই একই প্রোটিন। তাই ওই প্রোটিনকে এন্টিজেন হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি। আবার চিন্তা করা হয়েছিল, ক্যান্সার কোষের ডি,এন,এ মিউটেশন নিয়ে। কেননা ক্যান্সার কোষের ডি,এন,এ মিউটেশনের ফলে যে বিশেষ ধরণের পেপটাইড তৈরি করে তা দেহের অন্যান্য পেপটাইড থেকে সম্পুর্ণ আলাদা। তাহলে, যদি ওই পেপটাইডকে এন্টিজেন হিসেবে ব্যাবহার করে প্রতিষেধক তৈরি করা যায় কিনা। কিন্তু, প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে এই পেপটাইড আলাদা, সুতরাং প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা প্রতিষেধক তৈরি করতে হবে, যা নিতান্তই অসম্ভব।
ড. ক্যারেনো সম্প্রতি মেলানোমা নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি মেলানোমা (স্কিন ক্যান্সার) থেকে ডি,এন,এ পৃথক করে তার সাথে সুস্থ্য কোষের ডি,এন,এ তুলনা করে তৈরি করেন এন্টিজেন। সেই এন্টিজেনকে শ্বেত-কণিকার সাথে মিশিয়ে রোগীর দেহে প্রবেশ করান। (কেননা, নিরাপদভাবে পরীক্ষা করা ছিল মূল উদ্দেশ্য)
এই এন্টিজেনের বিরুদ্ধে টি-লিম্ফোসাইট পুরোপুরি সক্রিয় হয় এবং দেহের প্রকৃত মেলানোমার ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে। প্রাথমিকভাবে এই প্রতিষেধক একজনকে রোগীর ক্যান্সার সম্পুর্ণ নির্মূল করে এবং আরও দুইজনের ক্যান্সারকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়।
গবেষকদের মতে, “কেমোথেরাপি, এন্টি-ক্যান্সার ড্রাগ সহ ক্যান্সারের স্বাভাবিক ট্রিটমেন্ট চলাকালে বিশেষায়িত এন্টিজেনকে রোগীর শেত-কণিকাসহ রোগীর শরীরে প্রবেশ করালে, একজন মেলানোমা/স্কিন ক্যান্সারের রোগীকে হয়ত সম্পুর্ণ সুস্থ্য করে তোলা সম্ভব।”
এই ভ্যাক্সিন সফলভাবে ফেজ-১ ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে।
লেখকঃ Tonmoy
তথ্যসূত্রঃ
, A dendritic cell vaccine increases the breadth and diversity of melanoma neoantigen-specific T cells; Science aaa3828Published online 2 April 2015 [DOI:10.1126/science.aaa3828]