বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
দেশে কয়েক দশকে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী বেড়েছে অন্তত ১০ গুণ। এ সময়ে চিকিৎসক, সহায়ক জনবল ও আধুনিক সরঞ্জাম বাড়লেও আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। দেশে উন্নত মানের ক্যান্সার চিকিৎসা পায় মাত্র ১০ শতাংশ রোগী। ৯০ শতাংশ রোগী বিশ্বমানের ক্যান্সার চিকিৎসা পায় না।
এছাড়াও দেশে প্রতিবছর নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় অন্তত ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ। আর ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর মারা যায় ১ লাখ ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। দেশে খাদ্যনালি, ঠোঁট ও ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। আর নারীদের ক্ষেত্রে স্তন এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি।
গতকাল (১১ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ক্যানসার চিকিৎসায় বাংলাদেশ, অগ্রগতি ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় আলোচকেরা এসব কথা বলেন। এ বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গত ৩০ বছরে ক্যান্সার চিকিৎসায় অগ্রগতি হয়েছে। তবে এখনো অনেক মানুষ ক্যান্সার চিকিৎসার প্রবেশগম্যতার বাইরে। আমরা শতকরা ১০ ভাগ মানুষকে আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার চিকিৎসা দিতে পারি। আমাদের জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে।”
সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, “দেশের মানুষ ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। দেখা যায়, প্রতিবছর ৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার এই রোগীদের কারণে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই টাকাটা আয় করেন আমাদের দেশের পোশাকশ্রমিক বা অভিবাসী শ্রমিক। গরিব মানুষের কষ্টার্জিত টাকাগুলো আমরা অন্য দেশে ব্যয় করে আসছি।”
ক্যান্সার সোসাইটির পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাই বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসা রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক, এর বাইরে চট্টগ্রামে একটু ভালো। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কোনো চিকিৎসা-সুবিধার ব্যবস্থা নাই। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা বাড়াতে হবে।
বৈঠকের আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন গাইনি অনকোলজিস্ট অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, ইউরো অনকোলজিস্ট অধ্যাপক এম এ সালাম, স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ, ব্রেস্ট সার্জন শেখ ফরিদ আহমেদ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আলীয়া শাহনাজ প্রমুখ।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক।