খুপরি ঘরে ডায়গনিস্টিক সেন্টার, চিকিৎসক না হয়েও ক্লিনিকের ম্যানেজার করেন সার্জারি

শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

খুপরি ঘরে চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসক না হয়েও ক্লিনিকের ম্যানেজার করেন সার্জারি। স্বাস্থ্যখাতের এমন বেহাল দশার চিত্র রাজশাহীর। সম্প্রতি সময় সংবাদের বরাতে জানা গেছে এমন তথ্য।

চিকিৎসক না হয়েও সার্জারি করছিলেন ক্লিনিকের ম্যানেজার। (২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর অংশ) ছবি – সময় সংবাদ

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি খুপরি ঘরে চলছে ‘প্রাইম ডায়াগনস্টিক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদান কার্যক্রম। অথচ সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য বলছে, প্রতিষ্ঠানটি নগরীর রাজপাড়া এলাকার ঠিকানায় নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। আইন অনুযায়ী, ঠিকানা পরিবর্তন করে কার্যক্রম পরিচালনা করা বেআইনি।

দেখে খুচরা পণ্যের দোকার মনে হলেও এটি রাজশাহী তানোর উপজেলার প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ছবি: সময় সংবাদ

অন্যদিকে ২০২৩ সালে তানোরের ‘মহানগর ক্লিনিক’-এ পিত্তথলির অপারেশনে মারা যান এক নারী। অভিযোগ রয়েছে, ক্লিনিকের ম্যানেজার চিকিৎসক না হয়েও অপারেশন করেন, যার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্থানীয়দের দাবি, এখনও পরিস্থিতি উন্নত হয়নি, ক্লিনিকের ম্যানেজার অব্যাহত রেখেছে তার কার্যক্রম!

তানোর উপজেলায় ২২টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশিরভাগেরই নেই সঠিক নিবন্ধন ও দক্ষ জনবল। অদক্ষ কর্মী দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। নেই প্যাথলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। অদক্ষ জনবল ও অবৈধভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান আয় করছে মোটা অঙ্কের টাকা। সেইসঙ্গে নিবন্ধন নবায়ন না করেই এসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী মহানগর ও জেলার ৫৮৬টি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৬টির কোনো নিবন্ধন নেই। তবে ৪০০টি নিবন্ধিত হলেও ২৫০টির মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এস.আই.এম. রাজিউল করিম প্ল্যাটফর্মকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। অবৈধভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অন্যদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ অনুযায়ী, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের অনুমতি পায় না। কিন্তু তথ্য বলছে রাজশাহীর ৫৮৬টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে মাত্র ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে পরিবেশ ছাড়পত্র।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো ক্লিনিক, হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধিত হতে পারবে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে ছাড়পত্র দেয়া হয় না।’

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর ৪০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালা করেছিল। কিন্তু বর্তমানে সেসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo