গত ৮ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্মতি এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রস্তাবিত সম্প্রসারিত এলাকার মধ্যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রায় ১০০ একর জমির সংস্থান রয়েছে বলে খুলনার জেলা প্রশাসক প্রস্তাবে উল্লেখ করেছিলেন। এ অবস্থায় খুলনা জেলায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছিল।
চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর একান্ত সচিব ও মন্ত্রী পরিষদ সচিবের একান্ত সচিবকে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর রাজধানীতে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনার সময় তিনি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উত্থাপন করেন। পরবর্তীতে তিনি গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিবের কাছে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রস্তাবনা পাঠান। ওই প্রস্তাবনাটি অনুমোদনের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান সমকালকে বলেন, ‘খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হলে জনগণের জন্য গবেষণাভিত্তিক চিকিৎসা সেবা ও উন্নত চিকিৎসার অভাব অনেকাংশে লাঘব হবে। এছাড়া চিকিৎসা বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণা করাও সম্ভব হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন তার পাঠানো প্রস্তাবনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানান, খুলনা উপকূলীয় জেলা হওয়ায় এখানকার জনগণকে প্রতিনিয়ত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বসবাস করতে হয়। এ জেলায় একটি মাত্র সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা পর্যাপ্ত নয়। জেলায় উন্নত চিকিৎসার অভাবে রোগীরা ঢাকামুখী এবং অনেকে ক্ষেত্রে দেশের বাইরে যায়। অসহায় ও দরিদ্র রোগী প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয় কিংবা উন্নত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দক্ষিণাঞ্চলের এ উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বিভিন্ন ধরনের নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। এ সব রোগের প্রকৃত কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসার বিষয়ে গবেষণার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, খুলনা জেলায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অনেক স্মৃতি রয়েছে। খুলনাবাসীও এ জেলায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অনেক স্মৃতি লালন করে। সে কারণে খুলনায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হলে খুলনাবাসীর মধ্যে এ স্মৃতিকে চিরস্থায়ীভাবে লালনের একটি ক্ষেত্র তৈরী হবে।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন পেলে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ডিপিপি ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।
তথ্যসূত্রঃ সমকাল
প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটার
সুবহে জামিল সুবাহ
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ
সেশনঃ ২০১৪-১৫