“প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থাসহ গণমাধ্যমের প্রশংসনীয় ভূমিকার কারণেই বাংলাদেশে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এইচআইভি/এইডস ছড়িয়ে পড়েনি” উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।
গত রবিবার ৩ ডিসেম্বর ২০১৭, সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ও বি ব্লকের মধ্যবর্তীস্থল বটতলায় “এইচআইভি সেবা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প”-এর উদ্যোগে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র্যালি পূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান আরও বলেন, ” গণমাধ্যমের অবদানের কারণেই এইচআইভি সম্পর্কে দেশের মানুষ সচেতন হয়েছেন। তবে গণমাধ্যমের এই ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে করে ভবিষ্যতে প্রাণঘাতী এই রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে।”
সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবদুর রহিম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল্লাল আল হারুন, অবস এন্ড গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. সালেহা বেগম চৌধুরী, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. নাজমুল করিম মানিক, উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক খালেদা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিপূর্ণ সমাবেশে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় যেখান থেকে বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে রোগীদের কম্প্রিহেনসিভ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হয়। ১৯৮৯ সালে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগে বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি সনাক্ত করা হয় এবং তা অব্যাহত আছে। ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত সরকারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। বাংলাদেশে সরকারী পর্যায়ে প্রথমবারের মতো গত ১৬ মে ২০১৩ থেকে এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের সেবা প্রদান অবস এন্ড গাইনী বিভাগের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে এবং এ সেবা অব্যাহতভাবে চলছে। এই সেবার অধীনে এই পর্যন্ত এইচআইভি আক্রান্ত মোট ৪৯ জন গর্ভবতী মা সুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন। দেশে নতুন ৪৯টি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এইচআইভিতে আক্রান্ত সকল রোগীদের জন্য অত্র বিশ্ববিদ্যালয় তার সেবার পরিধি বৃদ্ধি করেছে, যা “স্ট্রেনদেনিং অফ এইচআইভি সার্ভিস” নামে চলতি বছরে শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিনামূল্যে এআরভি প্রদান ও সকল রোগের চিকিৎসা সেবার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হতে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী এআরভি নিচ্ছেন।
গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৬৪৭ জন রোগী এআরভি নিয়েছেন। তাদের সকল পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং এই সেবাও অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সরকারের সাথে ২০১৭ সালের স্লোগান “স্বাস্থ্য আমার অধিকার”-এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন দিক উন্মোচন করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ছবি: সোহেল গাজী। তথ্য : প্রশান্ত মজুমদার।