মাত্র ৩০০ টাকায় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কারণে ডা. এজাজ কে ‘গরিবের ডাক্তার’ বলে ডাকা হয়। এজাজুল ইসলাম একাধারে একজন ডাক্তার এবং বাংলাদেশী নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। তাঁর অভিনয় জগতে হাতেখড়ি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে। তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র শ্রাবণ মেঘের দিন।তাছাড়া তিনি দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তারকাঁটা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব থাকা এই গুণী ডাক্তারের জন্ম বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলায়। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.এস এবং পরবর্তীতে বি.এস.এম.এম.ইউ ( পিজি হাসপাতাল) থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ডা. এজাজের মতে সেবাই চিকিৎসকের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।ফলে তিনি নিজের চেম্বারে মাত্র ৩০০ টাকায় রোগী দেখেন এখনও। এছাড়াও অর্থের প্রতি লোভ বা অতিরিক্ত উপার্জনের আকাঙ্ক্ষা তাকে কখনও প্রভাবিত করতে পারেনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ডা. এজাজ বলেন, ‘আমার ভিজিট এখনও তিনশো টাকার বেশি বাড়াইনি। আমার যখন প্রোমোশন হল, আমার স্টাফরা আমাকে বলল, আপনার জুনিয়র ডাক্তাররা আপনার চেয়ে বেশি ফিস নেয়, আপনি তো আরও বিশেষজ্ঞ। এত কম ফিস নিলে তো মানুষ সন্দেহ করবে, মান সম্মান থাকবে না! আমি বললাম, সন্দেহ করার তো কিছু নেই। ‘
এজাজ বলেন, ‘এরপর যখন ৫০০ টাকা ফিস নেওয়া শুরু করলাম, তখন আমার মনে হলো যে ওদের ৫০০ টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে! আমি দুদিন পর্যন্ত নিলাম। পরে স্টাফদের ডাক দিয়ে বললাম, ফিস তিনশো টাকাই থাকবে, এবং এটা আমৃত্যু।’
ডা. এজাজের মতে, টাকার পেছনে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ছুটে চলা একটি মানসিক ব্যাধি। একসময়ের দাপুটে এই অভিনেতা বলেন, আমি খেতে পরতে পারি, চিকিৎসার খরচ টানতে পারি, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচটাও আল্লাহ চালানোর সুযোগ দিয়েছেন। তো, খারাপ কি! এর চেয়ে বেশি টাকার তো আমার মনে হয় না প্রয়োজন আছে। একজন মানুষ কেন এত টাকার পেছনে ছুটবে, এত টাকার কেন তার প্রয়োজন হবে। আমি মনে করি অকারণে টাকা উপার্জন করাটা একটা মানসিক রোগ।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মোঃ রাহাত হাছান