প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার
অধ্যাপক ডা. ফাতেমা আশরাফ
বিভাগীয় প্রধান (অবস্ ও গাইনী)
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
যে পটভূমিতে শুরু হয়েছিল এই ফেসবুক লাইভ সেবাঃ
যেন হঠাৎ একটি পরিবর্তন। যেন হঠাৎ আতঙ্ক। পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার তাড়া। ১১ মার্চ, ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষণা ‘কোভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক মহামারী’ রূপ নিয়েছে। ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম মিলেছে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সন্ধান। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পরিবর্তিত রূপে গুছিয়ে নিতে না নিতেই ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে সাধারণ ছুটি, কঠোর হুশিয়ারী দেওয়া হয়েছে ঘর থেকে কেউ বের হবেন না। সাধারণ মানুষেরা কি জানেন, আসলে Covid-19 কি ধরনের অসুস্থতা? কিভাবে ছড়ায়? কিভাবে নিরাপদ থাকা যাবে? একা নাকি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, নাকি ঘরে-বাইরে যারা কাছে পিঠে আছেন তাদের সহ? অসুস্থ হলে চিকিৎসালয়? চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী, যাদের মুখোমুখি বসতে হয়। হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভীড়- যেখানে মানুষের সাথে গা ঘেঁষাঘেঁষি হয়। হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ, যেখানে বিছানাগুলি রোগীর চাপে একেবারেই কাছাকাছি, বিভিন্ন বয়সী রোগী সহযোগীদের ভীড়। মানুষ এসবের অনেক কিছুই জানেন না।
আমাদের গর্ভবতী মায়েরা-আমাদের প্রিয় সম্পদ। তাদের ভালো রাখা, বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছিল MDG Target সরকার, সরকারের পার্টনার অর্গানাইজেশন, ছােট-বড় NGO প্রতিষ্ঠান সবাই কাজ করছিল। দিন-রাত্র নানা strategy, নানা Standard Operating Procedure (SOP), Budget বৃদ্ধি, Creative activities, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় Talent hunting এবং তাদের কাজে লাগানাে, Digital স্বাস্থ্য সেবা এসবই চলছিল Universal Health Coverage এবং SDG’র লক্ষমাত্রা অর্জনকে সামনে রেখে।
২৬ শে মার্চ থেকে হঠাৎ করে গৃহবন্দী বাংলাদেশ- সারা বিশ্ব তার সঙ্গী। এ যেন গােটা পৃথিবী একই শৃঙ্খলা মেনে গৃহে অন্তরীন। এরকম একটি নাজুক পরিস্থিতিতে গর্ভকালীন সেবা ও মায়েদের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেওয়ার ভিন্নতর উপায় খুঁজে পাওয়া ছিল একান্ত জরুরী। মানুষের জানা প্রয়ােজন ছিল ঘরে বসে তারা কি কি স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারেন, কখন কি জরুরী অবস্থায় তাকে ঘরের বাইরে আসতে হবে এবং কোন হাসপাতালে কখন কিভাবে সেবাটি পেতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে করণীয় সম্পর্কে বাংলাদেশের অগ্রনী ভূমিকায় থাকা ও জিএসবির প্রধানগণ দিন-রাত্রি পরিশ্রম করে তৈরী করেছেন গাইড লাইন, যা কি না সরকারি ভাবে অনুমােদিত হয়েছে। সেই বিষয়গুলিও মানুষের জানা একান্ত জরুরী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা সমূহ যেমন-Royal College of Obstetrician & Gynaecologists (RCOG), American College of Obstetrician & Gynaecologists (ACOG) তাদের নির্দেশিকা গুলি ওজিএসবি’র গাইডলাইন প্রস্তুতিতে সহায়ক হিসেবে সংকলিত হয়েছে। এজন্য দিন-রাত খেটেছেন ওজিএসবি’র কর্মকর্তা বৃন্দ।
সরকারের সহযোগী সংস্থা (Govt. Partner) যেমন UNFPA, UNICEF তারা ওজিএসবি কে সার্বিক সহায়তা দিয়েছেন। এতো কর্মকাণ্ড যাদের জন্য সেই মায়েদেরকে খবরগুলি পৌঁছানো, পরিবারকে আশ্বস্ত করা ছিল একটি জরুরী কাজ, একটি মানবিক বিষয়। সেই চাহিদা থেকে হঠাৎ আবিষ্কারের মতোই (evolution) আমাদের Live Facebook Session অনুষ্ঠানের প্রয়াস। এটিকে সামনে নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালকের অনুমতিক্রমে আমাদের সিদ্ধান্ত পরিপক্ক হয় যে, আমরা সেবাটি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বসেই দিব এবং গাইনী অবস্ বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসকবৃন্দ গ্রুপ গ্রুপ হয়ে কাজটি সপ্তাহে তিন দিন চালিয়ে যাবো।
https://phfbd.net/publications/tele-medicine-service-for-pregnant-women-during-covid-19/