প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২ মার্চ ২০২১, রোজ মঙ্গলবার
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসকের উপর হামলা করা হয়েছে।
গতকাল (১লা মার্চ) রাত ১২টায় রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটা অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম নেয়, যার সম্মুখীন হয়েছেন তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজের একজন ইন্টার্ণ চিকিৎসক। গত ২৫ তারিখে রোগী ফিমেল মেডিসিনে ভর্তি হয় হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স (হাইপোন্যাট্রেমিয়া), ফোকাল সিজার নিয়ে। সকল প্রকার পরীক্ষা, নিরীক্ষা, নিউরোলজি কনসালটেশন সব কিছুই চলছিল ঠিকঠাকমত। ঘটনার দিন রাতে রোগীর পুনরায় খিঁচুনি শুরু হলে ডায়াজেপাম দেয়া হলেও খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে আসে নি। আধা ঘন্টার মধ্যে রোগী মারা যায় এবং রোগীর আত্মীয় স্বজনেরা আকস্মিক চিৎকার চেঁচামেচি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে যা পরবর্তীতে ভয়ানক রুপ ধারণ করে। এমতাবস্থায় কর্তব্যরত ইন্টার্ন (নারী চিকিৎসক) নিজের রুমে কক্ষ তালাবদ্ধ করে অবস্থান নেন। রোগীর লোকজন দরজায় লাথি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে নার্স স্টেশনে হামলা করে এবং কর্তব্যরত নার্সদের আহত করে। ততক্ষণে অন্যান্য ইন্টার্ন চিকিৎসক, শতামেকের বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্রদের আগমনে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ২টার পরে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ও পুলিশের উপস্থিতিতে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে ‘এমন অনিরাপদ পরিস্থিতিতে কাজ করা সম্ভব নয় ‘এমন দাবি নিয়ে কর্ম বিরতিতে যান ইন্টার্নচিকিৎসক গন।
সেইসাথে গতকাল সকল দাবি দাওয়া পরিচালক এবং ইন্টার্ন কো-অর্ডিনেটর বরাবর পেশ করা হয়। শিক্ষকগণ দ্রুতই তাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত এবং কাজে যোগদানের আদেশ দেন।
একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলা জানা গেছে। এমতাবস্থায় এই অনিরাপদ পরিস্থিতিতে ৫০০ বেডের হাসপাতালে মাত্র ৪৪ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে এই শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করা তাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভবপর নয় বলে ইন্টার্নগন অবহিত করেছেন। তারা অতিশীঘ্রই নিরাপদ কর্মস্থলে ফিরতে চান। কর্তৃপক্ষ দ্রুতগতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি না মেনে নিলে, তারাও মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়ে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।