একজন ভুয়া চিকিৎসক এখন হাসপাতালের মালিক। নিজের হাসপাতালে রোগী দেখার সময় ব্যবস্থাপত্রে নিজের নামের সাথে এমবিবিএস লিখেছেন; করেছেন আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অপারেশন। কিন্তু উপরের কোনটারই প্রশিক্ষন নেই তার। পাঁচ বছর ধরে এভাবে তিনি প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারের নাম শেখ ওমর ফারুক। তিনি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়নপুর বাজারের পল্লীমঙ্গল জেনাােরল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার বাড়ি উপজেলার নারায়নপুর বাজার এলাকায়।
জানা গেছে,ওমর ফারুক ঘোড়াধারী গ্রামের লতিফা বেগমের সিজার অপারেশন করতে গিয়ে তার খাদ্যনালি ছিদ্র করে ফেলেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করা হলেও একন ও তিনি অসুস্থ। বাঢ়েগাঁও গ্রামের জাকির হোসেনের অন্ডকোশ ব্যথার কারনে আ্যাপেনডিসের অপারেশন করে নাড়ি কেটে ফেলেন। পরে তাকে দ্রুত কুমিল্লা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন,ডিগ্রি না থাকলেও ব্যবস্থাপত্রে এমবিবিএস শব্দ ব্যবহার করে পাঁচ বছর ধরে রোগী দেখছেন ওমর ফারুক।
আল্টাসনোগ্রামের ওপর প্রশিক্ষন না খাকলেও তিনি আল্টাসনোগ্রাম করে ভুল রিপোর্ট দিয়ে অনেকের ক্ষতি করেছেন। ক্ষিদিরপুর গ্রামের লাকি বেগম তলপেটের ব্যাথা নিয়ে কিছুদিন আগে তার কাছে আল্টাসনোগ্রাম করেন। রিপোর্টে তিনি জরায়ুতে টিউমার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে সন্দেহ বশত তিনি চাঁদপুরের একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়ে জানেন তার আ্যাপেনডিসাইটিস। ওমর ফারুক দাবি করেন ২০০৫ সালে ভারতের কলকাতার অলটারনেটিব মেডিকেল কাউন্সিল থেকে তিনি ডিগ্রি নিয়েছেন।
ডিগ্রি না থাকলেও ব্যবস্থাপত্রে এমবিবিএস ব্যবহারের বিষয়ে শেখ ওমর ফারুক বলেন,আগে করতাম এখন করিনা। চাঁদপুরের সিভিল সার্জন আব্দুস সত্তার জানান,ওমর ফারুক মূলত একজন আয়ুবের্দিক হেকিম। এমবিবিএস পরিচয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ ইসাহাক মিয়া জানান,ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।