প্ল্যাটফর্ম নিউজ, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় লকডাউন এবং তৃতীয় দফায় বিশেষ বিধিনিষেধের পর আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত চতুর্থ দফায় বাড়ানো হয়েছে ‘বিশেষ বিধিনিষেধ’। বুধবার (১৬ জুন) জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ গণমাধ্যমকে বিশেষ বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে জানান।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক আরো বলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসলেও পার্শ্ববর্তী জেলা নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহীর এই হার না কমায় আরো ১ সপ্তাহের জন্য এই বিধি-নিষেধ জারি করা হলো। এর আগে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার নিম্নগামী হওয়ায় পূর্বের কঠোর লকডাউন শিথিল করে পরবর্তীতে গত ৮ জুন হতে ১৬ জুন পর্যন্ত ১১টি বিশেষ বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। এর ফলে করোনা সংক্রমণের হার আরও নিম্নগামী হয়। তিনি আরো বলেন, আগামী এক সপ্তাহের লকডাউনে পূর্বের ১১ দফা বিধি- নিষেধ বলবৎ থাকবে।
বিধি নিষেধ সমূহঃ
সকল ধরনের দোকানপাট ও শপিংমল বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মার্কেট কমিটি, সংশ্লিষ্ট দোকানের মালিক তার অংশে উক্ত শারীরিক দুরত্ব ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করবেন; মোটরসাইকেলে চালক ব্যতীত অন্য কোন আরোহী বহন করা যাবেনা। রিকশায় শুধুমাত্র ১ জন যাত্রী এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় সর্বোচ্চ ২ জন যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করা যাবে, সকল ধরনের সাপ্তাহিক হাটবাজার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও মুদি দোকানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে; স্বাস্থ্যবিধি মেনে আম ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন চালু থাকবে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, নাচোল ও ভোলাহাট উপজেলায় অবস্থিত বৃহত্তম অমি বাজারসমূহের আশপাশের স্টেডিয়াম বা স্কুল কিংবা কলেজ মাঠে পূর্বের ধারাবাহিকতায় স্থানান্তরিত থাকবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; জনসমাবেশ হয় এমন ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ থাকবে; খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁসমূহ সকাল ৬ টা হতে রাত ১০ টা পর্যন্ত খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করতে পারবে। তবে খাবারের দোকান ও হোটেল- রেস্তোরাঁ সমূহে বসে খাবার খাওয়া যাবে না; সকল আন্তঃজেলা গণপরিহন (আম পরিবহনকারী যানবহন ব্যতীত) চলাচল বন্ধ থাকবে। আম ব্যবসায়ীগণ আম ক্রয়ের জন্য অন্যান্য জেলা হতে এ জেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। জেলার মধ্যে গণপরিবহনসমূহ আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কোন যাত্রী মাঙ্ক পরিহিত না থাকলে যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট চালক- হেলপার ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে; স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তের নামাজে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও সমসংখ্যক ব্যক্তি উপাসনা করতে পারবে। কৃষিকাজ ও নির্মাণকাজের সাথে জড়িত শ্রমিকগণ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও মাস্ক পরিধান করে কৃষিকাজ নির্মাণকাজ চালাতে পারবেন; জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। তবে সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাঙ্ক পরিধান বাধ্যতামূলকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
এসব বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য সকলকে আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাকিউল ইসলাম প্রমুখ।