বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় পাঁচ কোটি টাকায় ২০১৯ সালে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটে শুরু করা যাচ্ছে না ৫০ শয্যার কার্যক্রম। এতে ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৬ বছর আগে ৩০ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে।
কিন্তু নেই পর্যাপ্তসংখ্যক চিকিৎসক। বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ শয্যার জন্য প্রয়োজন ২৪ জন চিকিৎসক। কিন্তু পদের বিপরীতে রয়েছে ১৯ জন। শূন্য রয়েছে ৫টি পদ। অর্থাৎ ৩০ শয্যার চিকিৎসকও নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নথি বলছে, ৩০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে গড়ে ৯০ থেকে ১২০ জন। বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেয় গড়ে চারশোর বেশি রোগী। বর্তমানে ৩০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা চলতে থাকায় শয্যার অভাবে অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া রোগীদের ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের মেঝেতে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় অতিরিক্ত রোগীদের হাসপাতাল থেকে খাবার সরবরাহ করা হয় অত্যন্ত নিম্নমানের। এখানেও রয়েছে জনবল সঙ্কট। যেখানে ওয়ার্ডবয় তিনজন থাকার কথা সেখানে রয়েছে একজন। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। স্বাস্থ্য পরিদর্শক পাঁচজন থাকার কথা থাকলেও আছে একজন।
আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নেই, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১৫ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ৬ জন। স্বাস্থ্য সহকারি ৭৪ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ৫৭ জন। জুনিয়র মেকানিক্যাল, নাইট গার্ড, পরিচ্ছন্ন কর্মী সংকট রয়েছে। অনুমোদন থাকলেও জনবল নেই। বর্তমান এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৫৯ শূন্যপদ রয়েছে। হাসপাতালে সরকারি ৩টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। অপর অ্যাম্বুলেন্সটি প্রায় সময়ই রোগী নিয়ে বরিশাল টু বাকেরগঞ্জ আসা যাওয়ার মধ্যে থাকলে জরুরি প্রয়োজনের সময় সংকট দেখা দেয় বলে অভিযোগ রোগীদের।
তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। ৫০ শয্যায় চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র, অটোক্লেভ মেশিন, ইসিজি, বিভিন্ন পরীক্ষার যন্ত্র, বিভিন্ন চিকিৎসাযন্ত্র, শয্যা এবং কম্পিউটার ও ল্যাপটপ হাসপাতালে বরাদ্দ আসে। সেই থেকে ৬ বছর পার হলেও ৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও ওষুধপত্র পর্যন্ত বরাদ্দ মেলেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন চিকিৎসক প্ল্যাটফর্মকে বলেন, “৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অর্থোপেডিক্স, আই, ইএনটি, স্কিন, কার্ডিওলজিস্টসহ নয়জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবেন। এতে করে উপজেলার মানুষ বাড়ির কাছে আধুনিক চিকিৎসাসুবিধা ওই হাসপাতাল থেকেই পাবে। কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে আবেদন করা হয়েছে।”
বিস্তারিত জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মুঠোফোন বন্ধপাওয়া যায়।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।