প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার
বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটি এর যৌথ উদ্যোগে ”চিকিৎসক পদক-২০২১” গত ৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখ ঘোষণা করা হয়। করোনার বৈরী পরিস্থিতির কারণে ঐ সময়ে পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি সরাসরি করা সম্ভব হয়নি। গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, সোমবার, সন্ধ্যা ৭ টায় স্কাই বলরুম, লে মেরেডিয়ানে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। চিকিৎসক পদকের সার্বিক অর্থায়নে ছিল আইপিডিসি (IPDC)।
উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উল্লাহ, বেসরকারি মেডিকেল টিচার্স এন্ড ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আহমেদুজ্জামান সহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা। উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক পদক প্রদান কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. রোকন উদ্দিন এবং সদস্য সচিব ডা. ফয়সাল বিন সালেহ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, আমন্ত্রিত সুধীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ আরও অনেকে। সন্ধ্যা ৭:২০ ঘটিকায় পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের আসন গ্রহণ করেন এবং স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। বক্তব্যে ডা. মো. রোকন উদ্দিন বলেন,
“চিকিৎসক পদক যাঁরা অর্জন করেছেন তাদের উপস্থিতি আমাদের এই অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজনকে এগিয়ে নিতে উদ্বুদ্ধ করবে। আমাদের দেশের চিকিৎসকদের অর্জনকে সামনে আনার যে প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি তা অবশ্যই অব্যাহত থাকবে এবং রাষ্ট্রেরও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।”
কোভিডে বাংলাদেশের যে ২৪৯ জন চিকিৎসক আত্মত্যাগ করেছেন ও ১৭ কোটি মানুষের চিকিৎসা দেওয়া চিকিৎসকদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার, স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন রাখেন প্ল্যাটফর্ম অফ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটি’র চেয়ারম্যান গর্ভনিং পরিষদ মো. মহিবুর হোসেন নীরব। তিনি বলেন,
“প্ল্যাটফর্ম এবং মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট আজ চিকিৎসকদের যে সম্মানিত করতে পারছি, এটা সরকারের দায়িত্ব ছিল। আশা রাখছি ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে এবং রাষ্ট্র তাঁর সেরা সেবকদের আরো বেশি সম্মানিত করবে।”
মোট ৩ টি ক্যাটাগরিতে ১৯ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চিকিৎসক পদক-২০২১ গ্রহণ করে। এরমধ্যে চিকিৎসক ক্যাটাগরিতে ১৪ জন, চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ৩ টি প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য পেশাজীবি ক্যাটাগরিতে ২ জন চিকিৎসক পদক পান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১৪ জন চিকিৎসক এর মধ্যে ১২ জন সম্মানিত চিকিৎসক, ২ জন অন্যান্য পেশাজীবি এবং ৩ টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. আব্দুল মালিক ও অধ্যাপক ডা. তাহমিনা বানু এর পক্ষে প্রতিনিধিগণ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পদক গ্রহণ শেষে পদকপ্রাপ্ত সম্মানিত সুধী নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী জানান, তিনি অনেক সম্মাননা পেলেও, নিজের সদস্যদের সম্মাননা দেওয়া খুব একটা দেখেন নি।
পুরস্কার গ্রহণের পর অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ বলেন,
“চিকিৎসা পেশায় জড়িত তাঁদের সম্মানিত করার প্রয়াসে আমি অভিভূত। বিগত চার দশক ধরে প্রতিষ্ঠান ও প্রান্তিক পর্যায়ে গবেষণার চেষ্টা করছি৷ বাংলাদেশে আরো প্রায়োগিক ও মৌলিক গবেষণা করা সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন বেসরকারি মেডিকেল টিচার্স এন্ড ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আহমেদুজ্জামান। তিনি ডাক্তারদের সহায়তায় ডাক্তারদের এই পদকের ধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানান। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উল্লাহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চিকিৎসকদের সম্মাননা প্রদানের প্রস্তাবনা রাখেন। চিকিৎসক পদক-২০২১ এর সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা চিকিৎসকদের জন্য কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে গড়া এই দুইটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে সম্মামনা গ্রহণ করায় পদক প্রাপ্ত সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের উৎসাহ প্রদান করে ৯ টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক পদক প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. ফয়সাল বিন সালেহ এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। এই পদক প্রদান প্রতিবছর চলমান থাকবে বলে জানান তিনি। তিনি আইপিডিসিকে সামগ্রিক অর্থায়নের জন্যও ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর চিকিৎসক পদক প্রদান করা হবে। জানুয়ারি মাসে চিকিৎসক পদক সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে এবং এপ্রিল মাসে পালিত চিকিৎসক সপ্তাহের শেষ দিন (৭ এপ্রিল) এই পদক ঘোষণা করা হবে।
চিকিৎসক পদক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে-
http://www.doctorsaward.org