মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪
চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পানির ঘাটতি মোকাবেলায় ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) কে অর্থ সহায়তা দিবে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)। আজ সোমবার (০৪ অক্টোবর) ঢাকায় উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ইবিএল’র প্রধান কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সাক্ষর করা হয়।
বিশেষ কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ইবিএল এই উদ্দেশ্যে ৯২ টাকা (৭৬,৮৫৭ মার্কিন ডলার প্রায়) প্রদান করবে। আইসিডিডিআর,বি-র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ চুক্তির কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আইসিডিডিআর,বি-র ‘কঠিন বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সর্বোত্তম অনুশীলন’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ইবিএল তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আইসিডিডিআর,বি-র বায়োসেফটি, বায়োরিপোজিটরি এবং কন্টেনমেন্ট ল্যাবের প্রধান ড. আসাদুলঘানি এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দেবেন।
প্রকল্পের এই পর্যায়ে আইসিডিডিআর,বি-তে উন্নত জীবাণুমুক্তকরণ প্রযুক্তি প্রবর্তন করে এবং ঢাকার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও, এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য জাতীয় চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালাকে টেকসই ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত করা যাতে একটি পরিবেশবান্ধব এবং শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি করা যায়।
এছাড়াও আইসিডিডিআর,বি-র নতুন ‘লবণাক্ততা-প্রবণ এলাকার জন্য বিশুদ্ধ পানীয়: বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পানির সমস্যা দূরীকরণ’ প্রকল্পেও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে ইবিএল। প্রকল্পের আওতায় দেশের অন্যতম লবণাক্ততা-আক্রান্ত অঞ্চল- সাতক্ষীরার শ্যামনগরে একটি রিভার্স অসমোসিস (আরও) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে সেখানকার ২০০ পরিবারকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে। এছাড়াও, গবেষণার জন্যও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ন।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বিশুদ্ধ পানি গ্রহণের আগে এবং বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের ৬ মাস এবং ১২ মাসের ব্যবধানে রক্তচাপ এবং প্রস্রাবে সোডিয়ামের মাত্রা পরিমাপ করা হবে। যার ফলে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর কি প্রভাব পড়ছে তা বোঝা যাবে। এসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট ড. ফারজানা জাহান এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী ড. মো. মাহবুবুর রহমান এবং আইসিডিডিআর,বি-তে ওয়াশ-এর প্রধান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবেন।
ইবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, “ইবিএলে, আমরা আমাদের নিয়মিত কর্পোরেট দায়িত্বের বাইরে অনন্য কাজ করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য জনস্বাস্থ্যের সাথে একটি টেকসই পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখে এমন প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করার মাধ্যমে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করা। আমরা শুধুমাত্র একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করছি না বরং আমরা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করছি।”
আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ চুক্তির ব্যাপারে বলেন, “যখন ইবিএল-এর মতো কোম্পানি সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে, তখন বড় ধরণের পরিবর্তনের আশা করা যায়। এই প্রকল্পগুলি – চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার ফলে মানুষের জীবনে তাৎক্ষনিক প্রভাব ফেলার চেয়েও আরো বেশি ভূমিকা রাখে। এর ফলে তৈরি হয় স্থিতিশীলতা, ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু এবং স্বাস্থ্য সমস্যার টেকসই সমাধান খুঁজে পাওয়ার ভিত্তি। একসাথে, আমরা একটি ভবিষ্যত তৈরি করছি যেখানে প্রত্যেকটি কাজই গুরুত্বপূর্ন।”
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী