বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
চিনতে না পারায় কর্তব্যরত চিকিৎসককে পিটিয়েছেন নাটোরের এক বিএনপি নেতা। নাটোরের আধুনিক সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। নাটোরের আধুনিক সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলামকে তাঁর কক্ষে মারধর করেছেন ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. হিটলু।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মো. হিটলু নাটোর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার আত্মীয়।
গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলামকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত অবস্থায় তার নিজ কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে মারধর করে মো. হিটলু।
ঘটনার দিন রাতেই হামলার শিকার ডা. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে লিখিতভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সিভিল সার্জনকে অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন নাটোরের সিভিল সার্জন ও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মশিউর রহমান। পরবর্তীতে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ সোহেলসহ যুবদল নেতাকর্মীদের মধ্যস্থতায় লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হিটলু।
হামলার শিকার ডা. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালে এসে একজন রোগীর বিষয়ে জানতে চান হিটলু। এসময় তাকে চিনতে না পারার কারণে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে হিটলু এবং তার ৫-৬ জন সহযোগী বেধড়ক মারধর করে চলে যায়। পরে রাতে অভিযোগ করা হলে হিটলুসহ বিএনপি নেতারা হাসপাতালে এসে তাকে চাপ দিয়ে মীমাংসা করতে বলে। বিএনপি নেতাদের চাপে তিনি ক্ষমা করেছেন বলেও জানান।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি জেলার বাইরে আছেন। কর্তব্যরত একজন চিকিৎসককে মারধরে ঘটনা ঘটার পরে তিনি লিখিতভাবে জানালে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরে অভিযুক্ত এবং তার দলের নেতারা এসে ক্ষমা চাইলে উপস্থিত চিকিৎসকেরা আপস করেছেন।
চিকিৎসককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত। তার ভাষ্য, হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের সাথে তার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে নিজেরা বসে মীমাংসা করে নিয়েছেন।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি করেছিল সিভিল সার্জন। পরে নিজেরাই মীমাংসা করে নিয়েছে বলে জেনেছি। তারা অভিযোগটি তুলে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, গতকাল (১৬ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনায় ক্ষুব্ধ সদর হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীরা নিরাপদ কর্মস্থল চেয়ে মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করলে বিএনপি নেতারা সশরীরে হাজির হয়ে তা পালন করতে বাঁধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী