-জনস্বাস্থ্য বা পাবলিক হেলথ কি?
-এই বিষয়ে পড়াশুনা করলে ভবিষ্যতে কি করা যাবে?
-চিকিৎসকরা এই বিষয় থেকে কিভাবে উপকৃত হবেন?
-জনস্বাস্থ্য কি মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের আরেক রূপ নাকি এর পরিধি সুদূর প্রসারিত?
-জনস্বাস্থ্যে কিভাবে ক্যারিয়ার করা যায়?
এই সব প্রশ্ন আমাদের সবার মনের ভিতর থাকে। কিন্তু এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমরা সরারচর পাই না। এর কারণ হল এই প্রশ্নের উত্তর কোথায় পাওয়া যাবে তা আমরা জানি না। এই সব প্রশ্নের উত্তর জানানোর জন্যই আগামী ২১ অক্টোবর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে আয়োজন করা হয়েছে শিক্ষা মেলা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারএকটিভ স্টুডেন্ট ইভেন্ট।
এই অনুষ্ঠানে থাকবে নানা আয়োজন। আপনারা জানবেন আমাদের দেশের জনস্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা। এই বিষয়ের কয়েকজন সফল পেশাজীবীর সাথে কথা বলে জানতে পারবেন কিভাবে এই বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন গেমসের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে হয়।
ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। এই স্কুল বিশ্বের সবথেকে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং আইসিডিডিআরবির যৌথ উদ্যোগে। এই অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশের যেকোন পাবলিক হেলথ স্কুলের চেয়ে ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের ফ্যাকাল্টি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। হার্ভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের রিচারড ক্যাশ, জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির অ্যালেনা এডামস, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্তিফেন লুবির মত বিশ্বখ্যাত গবেষকরা ক্লাশ নেন। ক্লাশ নেন আইসিডিডিআরবির সেন্টার ডিরেক্টররা। ক্লাস নেন ব্র্যাকের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এছাড়া স্কুলের নিজস্ব সুদক্ষ ফ্যাকাল্টিরা রয়েছেন। এখানে প্রচুর ফিল্ড ভিজিট হয়। এখান কোর্সের ২য় দিনেই ফিল্ড ভিজিটে যেতে হয়। একই সাথে বিভিন্ন মডিউলে ফিল্ড ভিজিট রয়েছে। এই জন্য শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে জনস্বাস্থ্যের নানা সমস্যা অনুধাবন করতে শিখেন এবং সেইগুলো সমাধান করতে শিখেন।
২০০৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের বুলেটিনে ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথকে উন্নয়নশীল বিশ্বের সেরা ৬ টি পাবলিক হেলথ স্কুলের একটি হিসেবে সম্বোধন করে। এই স্কুলে বাংলাদেশী ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থী পড়াশুনা করতে আসেন। এখন পর্যন্ত ২৯ টি দেশের ৪২৪ জন শিক্ষার্থী এখান থেকে এমপিএইচ শেষ করেছেন। এর ফলে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসরুম। এই জন্যই এর এত খ্যাতি।
গত ১২ বছরে এই স্কুল অনেক জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানীর জন্ম দিয়েছে। লাইবেরিয়ার ইবোলা সংকটে অসাধারণ ভূমিকা রাখা মিয়াটা গাবানি এই স্কুলের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। এখানে লাইবেরিয়াকে ইবোলামুক্ত করার তার ভাষণটা দেখা যাবে http://(https://www.youtube.com/watch?v=hhx4L2MDTBQ)। ব্র্যাক এবং আইসিডিডিআরবিতে কর্মরত অনেক তরুণ গবেষক এখান থেকেই জনস্বাস্থ্য বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন।
ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা আয়েশা সানিয়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ স্কুলে পিএইচডি করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টোরাল করছেন। একই ব্যাচের ডা. রুমানা জেসমিন খান ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এপিডেমিওলজি বিষয়ে পিএইচডি করেন। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বেথেসডাতে তিনি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথে গবেষক হিসেবে কর্মরত।
এছাড়া দ্বিতীয় ব্যাচের ডা. মুহাম্মদ আজিজ রহমান অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ এডিলেড থেকে তিনি পিএইচডি অর্জন করেন। একই ব্যাচের ড. ইলিয়াস মাহমুদ লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের কাশিম ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। চতুর্থ ব্যাচের ডা. তৌফিক জোয়ারদার ডক্টরাল অফ পাবলিক হেলথ সম্পন্ন করেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লুমবারগ স্কুল অফ পাবলিক হেলথ থেকে। বর্তমানে তিনি ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত।
একই ভাবে ষষ্ঠ ব্যাচের ডা. মোরশেদা চৌধুরী এবং সপ্তম ব্যাচের ডা ফকির মোহাম্মদ ইউনুস যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটি এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ সাসকাচুয়ানে পিএইচডি করছেন। এই রকম বহু চিকিৎসক এখান থেকে লেখাপড়া করে দেশ বিদেশে স্বপদে কাজ করছেন।
জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের এই প্রোগ্রামে।
অনুষ্ঠানটি হবে ঢাকার মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি ভবনের ছয় তলায় অবস্থিত ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের ক্যাম্পাসে। এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আপনাকে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অনুষ্ঠানটি হবে দুই সেশনে। সকাল ১১ টা থেকে ১ টা এবং দুপুর ১ টা ৩০ থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত।
রয়েছে দুপুর বেলা লাঞ্চের সুব্যবস্থা।
রেজিস্ট্রেশন করুন এই লিংকেঃ https://goo.gl/forms/Bg35fSRVauRRz6fs2।
উল্লেখ্য আপনাকে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হলে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অবশ্যই সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা যেকোনো ফটো আইডি কার্ড অথবা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড সাথে আনতে হবে। এছাড়াও আপনি ফেসবুকে ইভেন্ট লিংক এ গিয়ে নিয়মিত খোঁজ রাখতে পারেন।
যেকোনো প্রশ্নের জন্য ফোন করুন 01735781986 কিংবা মেইল করতে পারেন এই [email protected] এই ঠিকানায়।
আপনারা আমন্ত্রিত।
লেখক ঃ ডা রজত দাশগুপ্ত এবং ডা মেহেদী হাসান
(লেখকদ্বয় উভয়ই গবেষণা সহযোগী হিসেবে ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে কর্মরত)