জলাতঙ্ক দিবস পৃথিবীতে প্রথম পালিত হয় সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে… ‘গ্লোবাল এলায়েন্স অফ র্যাবিস কন্ট্রোল’ এবং ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন, আটলান্টা, ইউএসএ’ এর যৌথ উদ্যোগে। মি. লুই পাস্তুরের মৃত্যুদিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে এরপর থেকে প্রতিবছর ২৮শে সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী “জলাতঙ্ক দিবস” উদযাপিত হয়…. কেননা তিনি এবং তার সহযোগীরা প্রথম জলাতঙ্কের কার্যকরী প্রতিষেধক আবিস্কার করেছিলেন।
মানুষ এবং পশুদের উপর জলাতঙ্কের প্রভাব, এর প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বিশ্বব্যাপী “জলাতঙ্ক দিবস” পালিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’ কর্তৃক প্রদত্ত নিদের্শনা অনুযায়ী গতকাল ২৯শে সেপ্টেম্বর, শনিবার জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজেও উদযাপিত হয়েছে “বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস -২০১৮।”
“জলাতঙ্ক: অপরকে জানান, জীবন বাঁচান”- এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে সকালে কলেজ প্রাঙ্গনে সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীদের সমন্বয়ে র্যালী, লিফলেট বিতরণ ও সিগনেচার ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায়, চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “প্ল্যাটফর্ম” এর সদস্যরা এই জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
পূর্ব নির্ধারিত আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীরা সকাল ১০ ঘটিকার পূর্বেই কলেজ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়।
সম্মানিত শিক্ষক মণ্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ মহোদয় তাঁর মূল্যবান উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা ঘোষণা করেন। বক্তব্য শেষে কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় একটি র্যালী। এতে অংশগ্রহণ করেন জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ ডা. মো. আবেদ হোসেন স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, প্যাথলজি বিভাগ; উপাধ্যক্ষ ডা. এ.কে.এম দাউদ স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সার্জারী বিভাগ; পরিচালক ডা. মো. তারেক আজাদ স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, শিশু বিভাগ; ডা. আরমান আহমেদ শিপলু স্যার, সহকারী পরিচালক; ডা. শামীমা আক্তার ম্যাম, অধ্যাপিকা ও বিভাগীয় প্রধান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ; ডা. প্রমোদ রঞ্জন সিংহ স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইউরোলজি বিভাগ; ডা. বোরহান উদ্দিন স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ফার্মাকোলজি বিভাগ; ডা. আতিকুর রহমান স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান; মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ; ডা. আব্দুল মজিদ মিয়া স্যার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ স্যার, সহযোগী অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, ডা. মুইজ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী স্যার, সহকারী অধ্যাপক, ডা. সাদিয়া রহমান চৌধুরী ম্যাম, সহকারী অধ্যাপক, ডা. তাসমিহা আহমেদ চৌধুরী ম্যাম, সহকারী অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডা. আরিফুর রহমান ও ডা. লিমা, লেকচারার, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ এবং ডা. সালেহ মাহমুদ দীপু, লেকচারার, প্যাথলজি বিভাগ।
র্যালী শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত ব্যানারে সিগনেচার করার মাধ্যমে সিগনেচার ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল মজিদ মিয়া স্যার। পরবর্তীতে সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলী, ছাত্র-ছাত্রী ও উপস্থিত জনগণসহ ৮২ জন সেই সিগনেচার ব্যানারে নিজেদের স্বাক্ষর প্রদান করেন। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত শতাধিক সাধারণ জনগণের মধ্যে জলাতঙ্ক বিষয়ক লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি তাদেরকে জলাতঙ্কের কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্বন্ধে অবহিত করেন।
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। “কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলে এ ধরনের জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে”- মন্তব্য করেন অধ্যাপিকা ডা. শামীমা আক্তার ম্যাম।
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের প্ল্যাটফর্ম প্রতিনিধি ডা. মিত্রবৃন্দা চৌধুরীর নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে উক্ত কলেজের প্ল্যাটফর্ম সদস্য সুলতান এম. আজওয়াদ কাইয়ূম নাফি, অমিয়াংশু চৌধুরী অয়ন, সাকিব আবদুল্লাহ হিমু, মোঃ সাদাকাতুল ইসলাম সৈকত ও আব্দুর রহিম।
অনুষ্ঠানটিতে আলোকচিত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন “জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি” এর সদস্য সুলতান এম. আজওয়াদ কাইয়ূম এবং আব্দুল্লাহ আল-মুহাইমিন।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডা. মুইজ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী স্যার এবং ডা. আরিফুর রহমান ভাইয়া। আগামী ৪ঠা অক্টোবর কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে “জলাতঙ্ক: প্রতিকার ও প্রতিরোধ” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তারা।
প্রতিবেদক-
ডা. মিত্রবৃন্দা চৌধুরী
সেশন ২০১১-২০১২,
প্ল্যাটফর্ম প্রতিনিধি,
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।