হাসপাতালের বিছানায় যে রোগীটা দিনের পর দিন, রাতের পর রাত রোগমুক্তির আশায় দিন গোণেন, তাঁর মানসিক অবস্থাটা একবার ভেবে দেখুন। আকাশ দেখার জন্য তাকে দেয়ালজুড়ে বিশাল খোলা জানালা আমরা সবসময় দিতে পারি না, খোলা বাতাসে অনেক দিন হয়তো সে নিশ্বাস নেয় না, ঝলমলে রোদের দেখাও হয়তো কমই মেলে। খটমটে ওষুধ, অক্সিজেন মাস্ক কিংবা কখনো এনজি টিউব কিংবা আইভি চ্যানেলের সাথে তার নিত্য বাস। আরোগ্য লাভ করে নিজ গৃহে ফেরবার বড্ড তাড়া!
শারিরিক কষ্ট লাঘব করাতে আমরা দিনরাত খেটে যাই। কিন্তু একবার তার মনের অবস্থাটা ভাবুন তো? শরীরের রোগ সেরে যাবার পরেও মনের অসুখটা কি পুরোপুরি সারে? হয়তো সে মেন্টাল ট্রমা বয়ে বেড়ায় বাকী জীবন। হাসপাতালের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও তার স্মৃতিতে আঘাত হানে সেই কারাবাস তুল্য দিনগুলোর কথা।
শরীরের রোগ সারিয়ে দেবার পাশাপাশি চলুন আমরা তার মনের অসুখ ও সারিয়ে তুলি।
হাসিমুখে একবার রোগীর মাথার কাছে দাঁড়িয়ে বলা:
‘খালা ভালো লাগছে আজ একটু?’
‘চাচা বাহ আজতো আপনি আগের দিনের চেয়ে বেশ সুস্থ’
‘বাবু, এইতো তুমি আর কিছুদিন পরই বাড়ি ফিরে বন্ধুদের সাথে খেলতে পারবে ‘
‘দেখিতো মা, একটু হাসুন তো, আপনার হাসিটা খুব সুন্দর তাহলে কেন মুখ ভার?’
বিশ্বাস করুন এই ছোট্ট ছোট্ট পজিটিভ কথাগুলো একজন অসুস্থ রোগীর মনের বল বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ! বেঁচে থাকার আনন্দের বাণী ছড়িয়ে দিন তার মাঝে। বেঁচে থাকার চেয়ে আনন্দের কিছু কি আর আছে? শরীরের রোগ সেরে যায় সময়ের প্রবাহে, মনের অসুখ সারাতে ক’জন পারে!
নিচের ছবিটি দেখুন। ঢাকা ডেন্টাল কলেজের মেয়েটার কথা মনে আছে? যার নাম জয়া সেতো জয় করবেই। ইন্ডিয়ায় চিকিতসা চলছে ওর। লিউকেমিয়ার সাথে যুদ্ধে হার মানবে না সে। ছবিটা রিসেন্টলি তোলা। কেমোথেরাপি শেষ হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হতে যাচ্ছে। কিন্তু দেখুন মেয়েটার চোখে মুখে কতটা আত্মবিশ্বাস.. প্রতি মূহুর্তে ও উপভোগ করছে প্রতিটা নিশ্বাস কে!
চলুন না বাঁচি প্রাণভরে!
বাঁচতে শিখাই, হাসতে শিখাই, ভালোবাসতে শিখাই জীবন কে!