মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
৬ উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ জেলায় ২৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কিন্তু জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসকের সংকট বিদ্যমান। বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে তা প্রবল। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় মোট চিকিৎসকের পদ আছে ২৪৬টি। এর মধ্যে ১২৬ জন চিকিৎসক থাকলেও শূন্য রয়েছে ১২০ পদ ; যা প্রায় অর্ধেক!
সদর উপজেলাঃ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট পদ আছে ৬৩টি। চিকিৎসক আছেন ৪২ জন। পদ শূন্য ২১টি। সদর হাসপাতালে জুনিয়র-সিনিয়র মিলিয়ে ১১ জন কনসালট্যান্টের পদ শূন্য আছে। ৩৩ শতাংশের বেশি চিকিৎসকের পদ শূন্য। হিসেব মতে, অন্যান্য উপজেলার তুলনায় এ হাসপাতালের জনবল সংকটের মধ্যেও বেশি আছে।
শৈলকূপা উপজেলাঃ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৭ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১৭ জন। পদ শূন্য ২০টি। এ হাসপাতালে ১০ জন কনসালট্যান্টের পদও শূন্য। এদিকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসা চলছে ৫০ শয্যারও কম জনবল দিয়ে। চিকিৎসকের পদ শূন্য ৫৪ শতাংশ।
কালীগঞ্জ উপজেলাঃ এ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৩ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১২ জন। পদ শূন্য ২১ চিকিৎসকের। এ হাসপাতালে ৯ জন কনসালট্যান্ট চিকিৎসকের পদও শূন্য রয়েছে। চিকিৎসকের পদ শূন্য ৬৩ শতাংশের বেশি।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলাঃ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের পদ আছে ৩০টি। চিকিৎসক আছেন ১৫ জন। শূন্য ১৫টি চিকিৎসকের পদ। হাসপাতালে আট জন কনসালট্যান্ট চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। চিকিৎসকের পদ শূন্য ৫০ শতাংশ।
কোটচাঁদপুর উপজেলাঃ এখানকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের পদ আছে ২৬টি। চিকিৎসক আছেন ১৬ জন। ১০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। এখানে চার জন কনসালট্যান্ট নেই। এছাড়া হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও লোকবল বাড়ানো হয়নি। চিকিৎসকের পদ শূন্য ৩৮ শতাংশের বেশি।
মহেশপুর উপজেলাঃ মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৪ পদের বিপরীতে আছেন ১৩ জন। এখানেও ২১ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। চিকিৎসকের পদ শূন্য প্রায় ৬২ শতাংশ।
এছাড়া ঝিনাইদহ জেলায় ১৩টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। এগুলো প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত। বেশিরভাগ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ব্রিটিশ আমলের। কোন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোন চিকিৎসকের পদায়ন নাই।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা যায়, শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে সিভিল সার্জন অফিসের দাবি – সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধের কোনো অভাব নেই।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক।