অনেকেই রক্ত দান করা নিয়ে অহেতুক ভয় পান। রক্ত দিলে মনে করেন যে তার শরীরে হয়ত কোন সমস্যা হবে। কিন্তু এটি যে একদমই নিছক ভাবনা, নিচে কিছু তথ্য উপাত্ত দিয়ে সেটা প্রমান করা হলো। কেন রক্ত দানের পরেও আপনি সম্পূর্ন সুস্থ থাকবেন,সেটিই দেখে নিন।
একজন পুরুষের শরীরের ওজনের প্রতি কেজিতে ৭৬ মিলি (মিলি-লিটার) রক্ত থাকে এবং একজন মহিলার শরীরের ওজনের প্রতি কেজিতে ৬৬ মিলি রক্ত থাকে……
কিন্তু একজন মানুষের শরীরে প্রতি কেজিতে প্রয়োজন ৫০ মিলি রক্ত… তাহলে পুরুষের শরীরে রয়েছে প্রতি কেজিতে অতিরিক্ত (৭৬-৫০=) ২৬ মিলি রক্ত এবং মহিলার শরীরে রয়েছে প্রতি কেজিতে (৬৬-৫০=) ১৬ মিলি অতিরিক্ত রক্ত…
রক্তদান করলে এই অতিরিক্ত রক্ত থেকে প্রতি কেজিতে ৮ মিলি রক্ত নেয়া হয়…
অর্থাৎ রক্তদানের পরেও পুরুষের শরীরে অতিরিক্ত রক্ত থাকছে প্রতি কেজিতে (২৬-৮= ) ১৮ মিলি রক্ত এবং মহিলার শরীরে (১৬-৮ = ) ৮ মিলি রক্ত… হ্যাঁ, অতিরিক্ত রক্ত…
মানে রক্তদানের পরেও ৫০ কেজি ওজনের একজন পুরুষ রক্তদাতা এবং মহিলা রক্তদাতার শরীরে যথাক্রমে থাকছে অতিরিক্ত (৫০ x ১৮ = ) ৯০০ মিলি রক্ত এবং (৫০ x ৮ = ) ৪০০ মিলি রক্ত…
সুতরাং রক্তদানের পর আপনি রক্তশূন্যতায় মরে যাবেন না কনফার্ম কারন রক্তদানের পরেও প্রয়োজনীয় রক্তের থেকেও ‘অনেক’ বেশি পরিমান রক্ত আপনার শরীরে থাকছে… 🙂
একজন ৫০ কেজি ওজনের মানুষ দুশ্চিন্তামুক্ত ভাবে খুব সহজেই রক্তদান করতে পারেন… রক্তদানের পর ২০ মিনিট বিশ্রাম নিবেন, পরবর্তী ২৪ ঘন্টা প্রচুর পরিমানে পানি খাবেন… ব্যাস, আর কিছু লাগবে না…
৫০ কেজি ওজন হওয়া সত্ত্বেও যারা এতদিন ভয়ে রক্তদান করেননি, এবার নির্ভয়ে রক্তদান করে ফেলুন 🙂
মূল লেখাঃ সুব্রত দেব।
রক্তদানের পরে করণীয়ঃ- (সময় নিয়ে পড়ুন প্লিজ)
১. রক্তদেয়ার পর কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট শুয়ে থাকা। সাথে সাথে ওঠে গেলে মাথা ঘুরে অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
২. বেড থেকে ওঠে বেশি বেশি ওরস্যালাইন মিক্সড করা পানি পান করা, এতে রক্তের জলীয় অংশের ঘাটতি পূরণ হবে।
৩. ব্লাড ব্যাংকে রক্তদান করলে ডোনার কার্ড নেয়া। হসপিটাল থেকে কোন প্রকার ডোনার কার্ড দেয়া হয়না। তবে রাতের বেলায় রক্তদান করলে তাদের থেকে একটি রিপোর্ট প্রিন্ট করে নিবেন প্লিজ। এরফলে পুলিশ হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. স্কিনিং টেষ্ট এর রিপোর্টের কপি নেয়া। এই রিপোর্টের কপি চেয়ে নিতে হবে।
৫. যে হাত থেকে রক্তদান করেছেন, কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা সে হাতে ভারী কোন কিছু না নেয়া। এতে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৬. যেদিন রক্তদান করবেন, সেদিন রাতে ঘুমানের সময় বিপরীত কাত হয়ে ঘুমানো। অর্থাৎ ডান হাত থেকে রক্ত দিলে বাম কাত হয়ে ঘুমানো, অথবা বাম হাত থেকে রক্ত দিলে ডান কাত হয়ে ঘুমানো উচিত। এতে হাতে রক্ত-সঞ্চালনে বাঁধা সৃষ্টি হবেনা।
৭. কমপক্ষে ২ দিন অতিরিক্ত বিশ্রাম নেয়া। এরফলে দূর্বলতা কেটে যাবে।
৮. হাতে কোন প্রকার ম্যাসাজ/মালিশ না করা। এরফলে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৯. অনেক সময় দেখা যায়- সুই ঢোকানোর স্থানসহ আশে-আশে চামড়ার নিচের অংশ কালচে রং হয়ে যায়, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এক-দুই দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। কোন প্রকার মালিশ/ম্যাসাজ করবেননা প্লিজ।
১০. রক্তদানের কার্যক্রম বেশি বেশি প্রচার করা, এতে অন্যরা উৎসাহিত হবে।
১১. Whole Blood দিলে কমপক্ষে ৩-৪ মাস পর পুনরায় রক্তদান করা। অনেকেই আবেগের তারনায় ২ মাস পরও রক্ত দিয়ে দেয়। এরফলে নিজেরও ক্ষতি হবে এবং রোগীরও উপকার হবেনা। কারন- আপনার শরিরের পর্যাপ্ত পরিমানে হিমোগ্লোবিনের সৃষ্টি হয়নি। এভাবে নিয়ম মেনে রক্তদান না করলে আপনারই রক্ত-স্বল্পতা দেখা দিতে পারে এবং বেক-পেইন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১২. যেদিন রক্তদান করেছেন, সেই দিনের তারিখটি নোট করে রাখুন। এরফলে পরবর্তি রক্তদানের তারিখ কবে হবে তা বের করে নিতে পারবেন।
রক্তদানে কোন প্রকার ক্ষতি নেই। তবে নিয়ম মেনে রক্তদান না করলে ক্ষতি আছে। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো- নিয়মগুলো মেনে চলুন।
☞ রক্ত দান সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ-(সময় নিয়ে পড়ুন প্লিজ)
1. রক্ত দানের সঠিক বয়স কত?
✔ ১৮ থেকে ৬০ বছরবয়সী সুস্থ সবল মানুষ রক্ত দিতে পারবে।
2. রক্ত দান কি নিরাপদ?
✔ ছেলেদের শরীরের ওজনের কেজি প্রতি ৭৬ মিলি লিটার এবং মেয়েদের শরীরে ওজনের কেজি প্রতি ৬৬ মিলিলিটার রক্ত থাকে। উভয়ের ক্ষেত্রেই ৫০ মিলিলিটার রক্ত সংবহনের কাজে লাগে, বাকিটা উদ্বৃত্ত থেকে যায়। অর্থাৎ,
ছেলেদের উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ = (৭৬-৫০) = কেজি প্রতি ২৬ মিলিলিটার
মেয়েদের উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ = (৬৬-৫০) = কেজি প্রতি ১৬ মিলিলিটার
ফলে ৫০ কেজি ওজনের একটি ছেলের শরীরে উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ = (৫০ x ২৬) = ১৩০০ মিলিলিটার
এবং একটি মেয়ের শরীরে উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ = (৫০ x ১৬) = ৮০০ মিলিলিটার
স্বেচ্ছায় রক্তদানে একজন দাতার কাছ থেকে ৩৮০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার রক্ত সংগ্রহ করা হয় যা তার শরীরে থাকা মোট রক্তের ১০ ভাগের ১ ভাগ এবং উদ্বৃত্ত রক্তের অর্ধেক বা তারও কম। এ কারণে অধিকাংশ রক্তদাতা রক্তদানের পর তেমন কিছুই অনুভব করেন না এবং এটি সম্পূর্ন নিরাপদ। যে পরিমাণ রক্তের তরল অংশ নেয়া হয় সেই পরিমাণ তরল অংশ মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই আবার আগের মতো হয়ে যায়। তাই রক্ত দান করা সম্পূর্ন নিরাপদ।
3. রক্ত দানের কি কোন সাইড এফেক্ট আছে?
✔ না রক্ত দানের কোন সাইড এফেক্ট নাই।
4. রক্ত দানে কতটুকু রক্ত নেওয়া হয়?
✔ আপনার শরীর থেকে প্রায় ৩৮০-৪০০মি.লি. রক্ত নেওয়া হয়।
5. কতদিন পর পর রক্ত দান করা যায়?
✔ ৪ মাস অন্তর রক্তদান করতে পারবেন।
6. রক্ত দান করতে কত সময় লাগে?
✔ ১৫ মিনিট সময় লাগে। বিশ্রাম এবং অন্যান্য সময় ধরলে সব মিলিয়ে ১ ঘন্টা লাগতে পারে।
7. রক্ত দান করতে ব্যাথা লাগে কি?
✔ জ্বী না। রক্ত দানের সময় আপনি ব্যথা পাবেন না।
8. রক্ত দানের ফলে আমি কি অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারি?
✔খুব অল্প সংখ্যক মানুষ রক্ত দান করলে ঞ্জান হারাতে পারে। যেহেতু রক্ত নেবার কাজটি একজন ডাক্তার করে থাকেন সেহেতু অসুস্থ হয়ে পড়ার কোন ভয়ই নেই। তবে রক্ত দান করার পর অবশ্যই বিশ্রাম নিবেন।
9. কিভাবে রক্ত নেওয়া হয়?
✔ প্রথমে বাম হাত থেকে আধা সিরিজ রক্ত নেওয়া হয়, ক্রস ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা করার জন্য। তারপর আপনার ডান হাতের বাহুতে একটি সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়। নিডিলটি ঢোকানোর সময় সামান্য ব্যথা লাগে। তারপর আর ব্যথা লাগবে না। আপনার রক্ত একটি নলের মাধ্যমে স্যালাইনের মত একটি ব্যাগে সহজেই জমা হয়ে যায়।
10. রক্ত দানের জন্য সর্বনিম্ন ওজন কতটুকু?
✔ এটা যদিও রক্তদাতার উচ্চতার ওপর নির্ভর করে তবেরক্তদাতার দেহের ওজন সর্বনিম্ন মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪৭ কেজি এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ৫০ কেজি বা এর বেশি হতে হবে। তবে প্লাটিল্যাট লাগলে ওজন কমপক্ষে ৫৫ কেজি হতে হবে, ছেলে/মেয়ে ।
11. রক্ত দানের পর আমার হাত ফুলে বা রক্ত জমাট বেঁধে বা ইনফেকশন হতে পারে কি?
✔ হাতের যেখান থেকে রক্ত নেয়া হয়েছে সেখানে ম্যসেজ করবেন না। ফুলে যাওয়া, জমাট বাধা বা ইনফেকশনের সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
12. এলকোহল (মদ) খাবার পর রক্ত দান করা যায় কি?
✔ না। রক্ত দেবার আগের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এলকোহল পান করলে রক্ত দান করা যাবে না। পান করার ২৪ ঘণ্টা পর রক্ত দিতে পারেন।
13. ধূমপায়ী ব্যাক্তি কি রক্তদান করতে পারবেন?
✔ ধূমপানে নিকোটিন সেবনের মাধ্যমে ফুসফুস বিশেষ ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়, কিন্তু সেবনকৃত নিকোটিনের খুব ক্ষুদ্র অংশ রক্তে মিশে, কোষে নিকোটিনের পরিমান মাইক্রোগ্রামে থাকে, কিন্তু রক্তে তা থাকে ন্যানো গ্রামে, যা টিস্যুর চেয়ে হাজার গুন কম, তাই ধূমপায়ী ব্যাক্তি নিঃসংকোচে রক্তদান করতে পারবেন।
14.এন্টিবায়টিক ওষুধ খাওয়া অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে কি?
✔ না। এন্টিবায়োটিক খাবার অন্তত ৭ দিন পর এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তারপর রক্ত দান করা যাবে।
15.ব্লাড প্রেশারের রোগী রক্ত দান করতে পারবেন কি?
✔ হ্যাঁ। যদি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে আপনি রক্ত দান করতে পারেন।
16.শিশু বুকের দুধ খায়, এ অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে?
✔ না। যখন শিশু শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করে তখন রক্ত দান করা যাবে না।
17.শিশুর জন্মের কতদিন পর মা রক্ত-দান করতে পারেন?
✔ শিশুর জন্মের ১৫ মাস পর মা রক্তদান করতে পারেন।
18.সর্দি লাগা/জ্বর থাকা অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে?
✔ ঠান্ডা বা সর্দি লাগা অবস্থায় যেহেতু একটি জীবানু সংক্রামন থাকে সেহেতু রক্ত দান
করা যাবে না।
19.জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল খাবার সময় রক্ত দান করা যাবে কি?
✔ হ্যা। জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল খাবার সময় রক্ত দান করা যাবে।
20.ডায়বেটিক রোগী রক্ত দান করতে পারেন?
✔ না। যে সমস্ত ডায়াবেটিক রোগী ইনসুলিন গ্রহন করেন তাদের রক্ত দান না করাই ভালো। তবে বিশেষ প্রয়োজনে তারা রক্ত দান করতে পারেন। তবে খাবার নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ব্লাডে গ্লুকোজ স্বাভাবিক থাকেল রক্ত দিতে পারেব।
21. রোগের ভ্যাকসিন নেবার পর রক্ত দান করা যাবে?
✔ না। ভ্যাকসিন নেবার অন্তত ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত রক্ত দান করা যাবে না। তবে এটা ভ্যাকসিনের ধরনের উপর নির্ভরশীল। এ ব্যপারে রক্ত দানের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
22. রক্ত দানের আগে আমার কি করা উচিত?
✔ আগের রাতে ভাল ভাবে ঘুমান। সকালে ভাল নাস্তা করুন। ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় (চা, কফি)খাবেন না। বেশী চর্বিযুক্ত খাবার খাবেন না। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। প্লাটিলেট দাতাদের মনে রাখতে হবে, বিগত ২ দিনের মধ্যে এসপিরিন নিয়েছেনকিনা। নিয়ে থাকলে ডোনেশন নাকরাই উত্তম।
23. রক্ত দানের সময় কি করা উচিত?
✔ আটোসাটো পোষাক পরবেন না। সবরকম দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। রক্তদান শেষে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
24.রক্ত দানের পর কি করা উচিত?
✔ রক্তদানের পর পর্যাপ্ত তরল পান করুন অন্তত ৪ গ্লাস (স্যালাইন, ফলের রস)। ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারী কাজ করবেন না। মাথা ঘুরলে শুয়ে পড়ুন এবং (পায়ের নীচে একটি বালিশ দিয়ে) পা মাথার চেয়ে উচুতে রাখুন। দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। ধুমপান করবেন না ৫ ঘণ্টা।
আপুরা রক্তদানে যাবার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই জেনে নিন…
#অতি_গুরুত্বপুর্ন
>>> ++ আপুরা রক্তদানে যাবার আগে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল করবেনঃ
♀ মাসিক চলাকালীন অবস্থায় রক্তদান করতে পারবেন না… (সবচেয়ে বেশি জরুরী, কারন এই তথ্যটা অনেক আপুই জানেন না)
♀ মহিলাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমান কিছুটা কম থাকে… আপনার হিমোগ্লোবিনের পরিমান যদি 11.5 gm/dl এর কম হয়, তবে রক্তদান করতে পারবেন না…
♀ গর্ভাবস্থায় রক্তদান করতে পারবেন না…
♀ মহিলারা কমপক্ষে ৪ মাস পর পর রক্তদান করতে পারেন…(৩ মাস পর কোনোভাবেই না)
♀ যে মহিলার সন্তান এখনো মাতৃদুগ্ধ পান করে, তিনি রক্তদান করতে পারবেন না …
অনেক আপুই এই ভুলগুলো করছে… শুধুমাত্র সঠিক তথ্য না জানার কারনে এই ভুলগুলো হচ্ছে… এবং এতে অনেকের শারীরিক অসুস্থতাও দেখা দিচ্ছে…
————————————————————————————
রক্তদানের পরে করণীয়ঃ-
১. রক্তদেয়ার পর কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট শুয়ে থাকা। সাথে সাথে ওঠে গেলে মাথা ঘুরে অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
২. বেড থেকে ওঠে বেশি বেশি ওরস্যালাইন মিক্সড করা পানি পান করা, এতে রক্তের জলীয় অংশের ঘাটতি পূরণ হবে।
৩. ব্লাড ব্যাংকে রক্তদান করলে ডোনার কার্ড নেয়া। হসপিটাল থেকে কোন প্রকার ডোনার কার্ড দেয়া হয়না। তবে রাতের বেলায় রক্তদান করলে তাদের থেকে একটি রিপোর্ট প্রিন্ট করে নিবেন প্লিজ। এরফলে পুলিশ হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. স্কিনিং টেষ্ট এর রিপোর্টের কপি নেয়া। এই রিপোর্টের কপি চেয়ে নিতে হবে।
৫. যে হাত থেকে রক্তদান করেছেন, কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা সে হাতে ভারী কোন কিছু না নেয়া। এতে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৬. যেদিন রক্তদান করবেন, সেদিন রাতে ঘুমানের সময় বিপরীত কাত হয়ে ঘুমানো। অর্থাৎ ডান হাত থেকে রক্ত দিলে বাম কাত হয়ে ঘুমানো, অথবা বাম হাত থেকে রক্ত দিলে ডান কাত হয়ে ঘুমানো উচিত। এতে হাতে রক্ত-সঞ্চালনে বাঁধা সৃষ্টি হবেনা।
৭. কমপক্ষে ২ দিন অতিরিক্ত বিশ্রাম নেয়া। এরফলে দূর্বলতা কেটে যাবে।
৮. হাতে কোন প্রকার ম্যাসাজ/মালিশ না করা। এরফলে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৯. অনেক সময় দেখা যায়- সুই ঢোকানোর স্থানসহ আশে-আশে চামড়ার নিচের অংশ কালচে রং হয়ে যায়, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এক-দুই দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। কোন প্রকার মালিশ/ম্যাসাজ করবেননা প্লিজ।
১০. রক্তদানের কার্যক্রম বেশি বেশি প্রচার করা, এতে অন্যরা উৎসাহিত হবে।
১১. Whole Blood দিলে কমপক্ষে ৩-৪ মাস পর পুনরায় রক্তদান করা। অনেকেই আবেগের তারনায় ২ মাস পরও রক্ত দিয়ে দেয়। এরফলে নিজেরও ক্ষতি হবে এবং রোগীরও উপকার হবেনা। কারন- আপনার শরিরের পর্যাপ্ত পরিমানে হিমোগ্লোবিনের সৃষ্টি হয়নি। এভাবে নিয়ম মেনে রক্তদান না করলে আপনারই রক্ত-স্বল্পতা দেখা দিতে পারে এবং বেক-পেইন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১২. যেদিন রক্তদান করেছেন, সেই দিনের তারিখটি নোট করে রাখুন। এরফলে পরবর্তি রক্তদানের তারিখ কবে হবে তা বের করে নিতে পারবেন।
রক্তদানে কোন প্রকার ক্ষতি নেই। তবে নিয়ম মেনে রক্তদান না করলে ক্ষতি আছে। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো- নিয়মগুলো মেনে চলুন।
Happy blood donating \bd/
https://www.facebook.com/mahbub.shahriar/posts/10153978629648145