ডা: এড্রিক এস বেকার নামটা মনে আছে আপনাদের?
জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ড অধিবাসী এই মানুষ’টির কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। খবর রাখিনা।
তৎকালীন সময়ে উনি সেদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করার পর, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন করেন মেডিসিনে। মানবসেবার জন্যই যেন উনার জন্ম হয়েছিলো। তাই লোভনীয় সব চাকরীর অফার ছেড়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ দেশগুলোতে ঘাটি বানাতেন মানুষের চিকিৎসা দেবার জন্য। ভিয়েতনাম যুদ্ধে তিনি যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা প্রদান শেষে লন্ডনে চলে যান। সেখানে তিনি পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন বাংলাদেশ নামক এক ছোট দেশের কথা। জানতে পারেন সেখানকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কথা। ১৯৭৯ সালে তিনি চলে আসেন বাংলাদেশে। টাংগাইল এর মধুপুরের কালিয়াকুরি গ্রামে। যে গ্রামটা এখনও এতটা প্রত্যন্ত যে, কেউ বিরক্ত হয়ে যেতেও চায় না। ১৯৭৯ সালে না জানি কেমন ছিলো। সেই গ্রামে তিনি ধীরে ধীরে চিকিৎসা বিপ্লব ঘটান। মাটির ঘরে প্রতিষ্ঠা করেন তার স্বপ্নের হাসপাতাল। নিজেও থাকতেন মাটির ঘরে। ঘুমাতেন মাটিতে। তিনি সেখানে প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল। ছোট শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা সেখানেই দেন। এদেশের মাটিতে জন্ম না হলেও, দিয়েছেন এদেশকে অনেক কিছু। গ্রামের মানুষদের কাছে তিনি “ডাক্তার ভাই” নামে পরিচিত।
আরো অনেক কিছুই লিখার ছিলো। লিখতে গেলে উনাকে নিয়েই একটা মহাকাব্য হয়ে যাবে। তবু কিছু কথা থেকেই যাবে। যদিও প্ল্যাটফর্মিয়ান মিশু মুস্তাফিজ এর আগে উনার হাসপাতাল থেকে ঘুরে এসে তা নিয়ে লিখেছিলো প্ল্যাটফর্মে।
আজ, দুপুরে সেই “ডাক্তার ভাই” মারা গেছেন।
ছবিতে, মিশুর সাথে মাঝখানের ব্যক্তিটিই মানবসেবার পথিকৃৎ, ডা: এড্রিক এস বেকার..।
সবাই উনার জন্য আশীর্বাদ করবেন, যেনো ঈশ্বর উনাকে স্বর্গের শ্রেষ্ঠ আসনে অধিষ্ঠিত করেন…।
লেখা: তন্ময় কর্মকার তনু
পরিমার্জনা: বনফুল