টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকে ৪৫০-৪৮০ জন।

মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

নামে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল হলেও রোগী ভর্তি থাকে প্রায় ২ গুণ বেশি! এতে সেবা নিতে আসা রোগীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েন তেমনি সেবা দিতে হিমশিমে খেতে হয় চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালে অনুমোদিত ৫৮ জন চিকিৎসক পদের মধ্যে ১৮টি পদ শূন্য! হাসপা জনবলের প্রশাসনিক ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন খাতে কর্মচারীর পদ রয়েছে ৪০১টি। এর মধ্যে চিকিৎসকসহ ৭২টি পদ শূন্য। সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও সিনিয়র কলসালটেন্ট (সার্জারি) সিনিয়ন কলসালটেন্ট (স্কিন ভিডি) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদই শূন্য! এছাড়াও সিনিয়র নার্সের ৬টি পদ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ৩৫টি পদ শূন্য পড়ে আছে। এ প্রতিষ্ঠানে ৭৭জন আউটসোর্সিং জনবলের মধ্যে লোক নিয়োগ করা হয়েছে মাত্র ৪৮ জন, ১৬ জন সুইপার পদের বিপরীতে ৯টি পদই শূন্য।

তথ্য বলছে, হাসপাতালটির মোাট ২৫০টি বেডের বিপরীতে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ৪৪০ থেকে ৪৮০ জন। ফলে হাসপাতালের পুরুষ, নারী, শিশু এবং গাইনিসহ সবগুলো ওয়ার্ডেই বেডের সংকট প্রকট। সেই সঙ্গে কর্মচারী সংকটে পরিবেশও নোংরা। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভেতরে ও বারান্দার মেঝেতে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।

এই সংকটকে পূঁজি করে গড়ে উঠেছে দালালদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কোন কোন দালাল আবার গ্রাম থেকে আসা নিরক্ষর মানুষজনকে ভুলভাল বুঝিয়ে হাসপাতালের ভেতর পর্যন্ত আসতেই দেন না। বাইরে থেকেই রোগীদের নিয়ে যান বিভিন্ন ক্লিনিকে।

হাসপাতালের একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার প্ল্যাটফর্মকে জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালে পুরাতন এক্সরে মিশিন, এমআরআই, ফিজিও থেরাপি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দিয়ে আধুনিক বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব না। এ গুলো কে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি দিয়ে পরিবর্তন না করায় আধুনিক বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। পর্যাপ্ত জনবল ও লজিস্টিক সরবারাহ পেলে আমরা কাঙ্খিত সেবা দিয়ে পারবো। ডাক্তার, সবকিউরিটি, পর্যাপ্ত নার্স, সাপোর্টিং স্টাফ না থাকায় পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দেয়া যাচ্ছে না। আয়া ও ওয়ার্ড বয় না থাকায় কি যে কষ্ট তা বুঝানো সম্ভব নয়। বিকেল এর পর পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দেখা মিলে না। এ দিকে হাসপাতালে আউটডোরে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দিয়ে প্রায় ১৮০০ থেকে ২০০০ হাজার রোগীর চিকিৎসা দিতে হয়। এ সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজর দেয়া দরকার।’

হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালটি ১৯৭৪ সালে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রুপান্তরিত হয়। এর পর থেকে হাসপাতালটি নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে চিকিৎসকের ১৮ পদ শূন্য থাকার কারনে প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ চালু থাকলেও আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় ডাক্তার এবং দক্ষ জনবল না থাকার কারনে রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও আরও একটি ১০ বেডের আইসিইউ প্রস্তুুত করা হয়েছে। সময় মতো সেটি চালু না করা গেলে মূল্যবান মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক।

Moin Uddin Ahmad Sibli

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি সম্ভব : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

Tue Dec 10 , 2024
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ‘সবাই মিলে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে ফিরে যাই, তাহলে সামগ্রিকভাবে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব’ বলে মনে করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ওষুধের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। আসলে এটা কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা না। এটা চিকিৎসা ব্যবসা হয়ে গেছে।’ আজ (১০ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo