বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)’র স্বাধীন পরিদর্শক পল মার্টিনকে বরখাস্ত করেছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে এ খরব জানা গেছে।
মার্টিনকে দপ্তর ট্রাম্প প্রশাসনের ইউএসএআইডি বন্ধ করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার একদিন পর তাকে অপসারণের এ সিদ্ধান্ত আসে।
ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএনসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে মার্টিনকে দুই বাক্যের একটি ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হয় তার পদ ‘তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল’ করা হয়েছে, তবে এর কারণ মেইলে উল্লেখ করা হয়নি।
মার্টিনের দপ্তরের প্রতিবেদন জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করে ‘স্টপ-ওয়ার্ক’ আদেশ কার্যকর করায় ৪৮৯ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৫ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা) খাদ্য সহায়তা নষ্ট হওয়ার বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে,।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তার দপ্তর দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা, অপচয় ও দুর্নীতি প্রতিরোধে ইউএসএআইডির জন্য সুপারিশ দিয়ে আসছিল।
‘তবে, সংস্থাটির সাম্প্রতিক ব্যাপক কর্মীসংকোচন, বৈদেশিক সহায়তার পরিসর এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের অনিশ্চয়তা ইউএসএআইডির কার্যকারিতা দুর্বল করে দিয়েছে।’
ট্রাম্প এর আগেও ১৮ জন ফেডারেল পরিদর্শক বরখাস্ত করেছেন, যারা সাধারণত সরকারি সংস্থাগুলোর স্বাধীন তদারকি করেন। তবে, মার্টিন ছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিয়োগপ্রাপ্ত, যিনি এতদিন পদে বহাল ছিলেন।
দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি ব্যয় সংকোচনে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে।। এর নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং ট্রাম্পের প্রধান দাতা ইলন মাস্ক, যিনি সরকার সংকোচনের এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে ইউএসএআইডিকে, যা বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশে স্বাস্থ্য ও জরুরি সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করে। সংস্থাটি ৪২.৮ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৪.৭ লাখ কোটি টাকা) বাজেট পরিচালনা করে, যা বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার ৪২ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের মতো দেশের সঙ্গে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে ইউএসএআইডিকে ‘নরম কূটনীতির’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে দেখা হতো।
ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপে—
বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে, দশহাজার কর্মীকে পদচ্যুত করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো আইনি লড়াইয়ে নেমেছে। গত শুক্রবার এক ফেডারেল বিচারক প্রশাসনের ২,২০০ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানোর পরিকল্পনা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, সংসদের অনুমোদন ছাড়া ট্রাম্প কোনো সরকারি সংস্থা বন্ধ করতে পারেন না, এটি সংবিধানবিরোধী।
প্ল্যাটফর্ম/