প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৩ই নভেম্বর, শুক্রবার, ২০২০
“ডাউন সিন্ড্রোম” একটি জিনগত রোগ যেখানে কোনো ব্যক্তির শরীরের ২১নং ক্রোমোসোমের অন্যান্যদের মত ২টি কপি না থেকে ৩টি কপি থাকে। ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি খুবই ধীর গতিতে হয়। যেখানে আর পাঁচটা বাচ্চা হাঁটাচলা করতে, কথা বলতে শিখে যায়, সেখানে “ডাউন সিন্ড্রোমে” আক্রান্ত বাচ্চাদের কথা বলতে, অন্যের কথা বুঝতে, হাঁটাচলা করা শিখতে বেশ সময় লাগে।
মানসিক বিকাশজনিত সমস্যার কারণে স্পেশাল স্কুলে ভর্তি হতে হয় তাদের। যেখানে বিভিন্ন থেরাপি ও চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও কিছুটা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে “ডাউন সিন্ড্রোমে” আক্রান্ত বাচ্চারা। এমনিভাবেই “ডাউন সিন্ড্রোমকে” হারিয়ে এক অসামান্য জয় লাভের নজির স্থাপন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেয়ে “চেলসি ওয়ার্নার”।
চেলসি ওয়ার্নার, বয়স ছাব্বিশ বছর। যখন চেলসি ওয়ার্নারের বয়স সাত, তখনও সে ঠিক করে হাঁটতে শেখেনি। কিন্তু “ডাউন সিন্ড্রোমে” আক্রান্ত সেই চেলসি ওয়ার্নার এখন ইন্টারন্যাশনাল মডেল এবং “স্পেশাল অলিম্পিকস ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপে” অংশগ্রহণকারী একাধিকবার হওয়া চ্যাম্পিয়ন । চেলসির যখন আট বছর বয়স, তখন থেকে তাকে বিভিন্ন ধরনের খেলার সাথে যুক্ত করে তাঁর বাবা-মা। সাঁতার, ফুটবল, জিমন্যাস্টিক ইত্যাদি শিখতে গেলেও চেলসি ওয়ার্নারের একমাত্র জিমন্যাস্টিসকটাই রপ্ত হয় সব খেলার মধ্যে।
ডাউন সিন্ড্রোমের কারণে আর পাঁচটা বাচ্চার মতো খুব দ্রুত সবকিছু শিখে ফেলতে না পারার কারণে বছরের পর বছর প্রশিক্ষণ নিতে হয় তাঁকে।
২০১২ সালে চেলসি ওয়ার্নার অংশগ্রহণ করেন “স্পেশাল অলিম্পিকস ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপে”। সেখানে চেলসি জিমন্যাস্টিক চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পুরস্কৃত হন এবং তারপর থেকে তিনবার এই “স্পেশাল অলিম্পিকস ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপে” অংশগ্রহণ করেন ও পুরস্কৃত হন।
চেলসির এই সাফল্যের পিছনে অন্যতম কারণ হলো তাঁর বাবা মা সবসময় তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। তাই চেলসি ওয়ার্নার দেখিয়ে দিয়েছেন, শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তি ও পারিবারিক সমর্থনের জোরে যেকোনো শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতাকেই কাটানো যায়।