৬ মে, ২০২০, বুধবার
শাকিল সারোয়ার খান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
গতকাল বিকেলে বাবার শরীরটা হটাৎ একটু খারাপ হয়ে যাওয়ায় সন্ধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তাররা ভর্তি করে দিলেন। রাতটা হাসপাতালে কাটিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা আমার জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘতম ভয়ংকর একটা রাত। প্রতিটি মুহুর্তে আতঙ্কে ছিলাম। মনে হচ্ছিল ভাইরাসটা মনে হয় আমার আশেপাশে ভেসে বেড়াচ্ছে।
আমি এখনো জানিনা আমার পরবর্তী অবস্থা কি হবে। আল্লাহ সহায় হোন। হাসপাতালে অসংখ্য মানুষ এদিক থেকে ওদিক হাটাহাটি করে আর আমার বুক ধড়ফড় করে।
সন্ধ্যার দিকে ‘নাবিল আজগর’ নামে একজন কার্ডিওলজিস্ট বাবাকে দেখতে আসেন। অসম্ভব ভালো, হাম্বল এবং অমায়িক একজন মানুষ। তিনি উনার সুন্দর ব্যবহার আর ভালো ভালো কথায় আমার বাবা ৫০% ভালো হয়ে যান।
রাতের দিকে যে ক’জন ডিউটি ডাক্তার ছিলেন, উনারাও অসম্ভব ভালো ব্যবহার করেছেন আমাদের সাথে। আমার বাবাকে খুব কেয়ার করেছেন উনারা। বাবার টেস্টের রিপোর্ট গুলোর জন্য একটু পরপর উনারা খোঁজ নিয়েছেন। উনাদের প্রতি অসংখ্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
বাবার অবস্থা আজকে একটু ভালো হওয়ায় বাসায় নিয়ে আসি। এখন আলহামদুলিল্লাহ একটু ভালো আছেন।
হাসপাতালে একটা ব্যাপার আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে। যে মানুষগুলো হাসপাতালে আসা প্রতিটি রোগীকে এভাবে যত্ন সহকারে সেবা দিচ্ছেন, অথচ উনাদের তেমন কোনো যত্ন কর্তৃপক্ষ নেননি। উনাদের সেফটি ছিল শুধু সার্জিক্যাল মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লাভস। যেটা আমার কাছেও ছিলো, এর বাইরে আমি বেশি কিছু দেখিনি।
আমাদের সামনের দিনগুলো খুবই ভয়াবহ। প্রতি দিনই আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ভাঙছে। এই পরিস্থিতিতে একজন চিকিৎসক এই সেফটি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া কোনোভাবেই নিরাপদ না।
চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না দিলে দেশের ভবিষ্যত ভালো হবে না, বুঝেও কেন যে কর্তৃপক্ষ সে দিকে সুনজর দেয় না, তা আমি বুঝতে পারি না।
আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন। বাবার জন্য দোয়া চাই সকলের কাছে।