প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ এপ্রিল ২০২০
কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্ব জুড়ে চলছে থমথমে পরিবেশ। বন্ধ হয়েছে কর্মসংস্থান, বন্ধ যাতায়াত। অবরুদ্ধ জীবন কাটাচ্ছে জনগন। তবে বসে নেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ খ্যাত এ মহামারির সম্মুখ যোদ্ধারা। এদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যারা তারা হচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। দেশে দেশে জাতীয় বীর উপাধি পেয়েছেন কোথাও আবার তুলনা করা হচ্ছে দেবতাদের সাথেও। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতই লড়াই করে যাচ্ছেন আমাদের দেশের চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। অপ্রতূল নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ নানা জটিলতা মোকাবিলা করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত, পাচ্ছেন প্রশংসাও। কিন্তু এর উল্টো চিত্রের উদাহরণ কম নয়। কেউ কেউ হচ্ছেন হেনস্তার শিকার, কাউকে ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে ভাড়া বাড়ি। কেউবা হচ্ছেন শারীরিক নির্যাতনের শিকার। শুধু চিকিৎসাকর্মীরাই নন, এ পরিস্থিতি পড়েছেন তাদের পরিবার, এমনকি তাদের সাহায্যকারীরাও। এমনি এক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসক।
গন পরিবহণ বন্ধ থাকায় যখন চিকিৎসা সেবা দিতে কর্মস্থলে যোগদান কঠিন হয়ে পড়ে, তখন তাঁকে ও তাঁর এক সহকর্মীকে নিজের গাড়িতে করে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয়ার জন্য এগিয়ে আসেন একজন ড্রাইভার। আর এটাই কাল হয়ে ওঠে ঐ ড্রাইভারের জন্য। তিনি কেন চিকিৎসকদের গাড়িতে তুলে পৌঁছে দিচ্ছেন, তার জবাবদিহিতা চান এলাকাবাসী। আটকে দেয়া হয় তার গাড়ি। বাধ্য করা হয় গাড়িটি অন্য এলাকায় রাখতে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, যেহেতু গাড়িটি ডাক্তারদের চলাচলে ব্যবহার করা হচ্ছে সেহেতু এটিতে করোনা ছড়াবে, আর এ করোনা এলাকায় ছড়াবে। অতএব এ গাড়ি এলাকায় ঢুকতে দেয়া যাবে না!
এলাকাবাসীকে জবাবে ড্রাইভার বলেন, “ভাই, আপনাদেরতো আমি আগে অনেক সময়ই এই দুই স্যারকে দিয়ে চিকিৎসাজনিত কাজে সহযোগিতা করেছি এবং অসুস্থ হলে তো তাদের নিকটই যেতে হবে।”
তবে ড্রাইভারের এ কথায় মন গলেনি এলাকাবাসীর, চিকিৎসক ও ড্রাইভারের অতীত উপকারের কথা প্রায় অগ্রাহ্য করে ড্রাইভারকে তার গাড়ি এলাকার বাইরে রাখতে বাধ্য করে।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশের চিকিৎসকরা, তার প্রতিদানে এমন ব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় তাই এ ঘটনায় অবাকই হয়েছেন অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি সম্মুখ যোদ্ধা এ চিকিৎসক।
নিজস্ব প্রতিবেদক/মোঃ নাফিউল ইসলাম টিপু