২৬ অক্টোবর, ২০১৯
ডাক্তার শাহ আলম হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ডাকাত দলের প্রধান নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালু (২৬) নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকায় র্যাব-৭ এর টহল দলের সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়কালে ডাকাত দলের প্রধান নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালু নিহত হয়।
গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে সাড়ে ৪টার দিকে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে এ বন্দুকযুদ্ধে ঘটনা ঘটেছে।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাহমুদুল হাসান মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল সহ দুটি অস্ত্র ও ২৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র্যাব-৭।
উল্লেখ্য যে, গতকাল ২২ অক্টবর র্যাব-৭ ডাক্তার শাহ আলম হত্যার সাথে জড়িত লেগুনা চালক ওমর ফারুক (১৯)কে আটক করে। পরে সে আদালত ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে এবং হত্যার সাথে জড়িত সকলে নাম পরিচয় প্রকাশ করে।
র্যাব-৭ এর একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুকের দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ডাকাত দলের মূল হোতা নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালুকে আটকের জন্য সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালাতে গেলে র্যাবের উপস্থিতি দেখে কালু ডাকাত তার সহযোগীরাদের নিয়ে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে র্যাব পাল্টা গুলি চালালে ডাকাত দল পিছু হঠে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে কালু ডাকাতের গুলিবিদ্ধ লাশ এবং অস্ত্র পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য গত ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে কর্মস্থল সীতাকুণ্ড থেকে নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসায় ফিরতে একটি লেগুনায় (জীপ) উঠেন সৌদি আরবের মদিনা ফেরৎ চিকিৎসক ডাক্তার শাহ আলম।
ছিনতাইকারী চক্র লেগুনাটি রয়েল গেট এলাকায় পৌঁছালে ডাক্তার মোঃ শাহ আলমের কাছ থেকে টাকা পয়সা এবং মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় শাহ আলম বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ডাক্তার মোঃ শাহ আলমকে ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যা করার পর তার লাশ রাস্তায় ফেলে দেয়। এর পর তারা লেগুনা নিয়ে সাগর পাড়ে চলে যায়। ওই লেগুনায় আগে থেকেই দুজন ছিনতাইকারী ছিলো।
র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী তারেক আজিজ বলেন, “খুনের পর মরদেহের পরিচয় যাতে শনাক্ত করা না যায় সেজন্য ডাক্তার শাহ আলমের মুখ বিকৃত করে দেন ছিনতাইকারীরা। পরে কুুুমিরাস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মরদেহটি ফেলে পালিয়ে যান তারা।”
ডাক্তার শাহ আলম দীর্ঘ ৩০ বছর সৌদি আরবের একটি স্বনামধন্য হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে নিজের গ্রামের গরীব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা দেবার মনোবাসনা নিয়ে চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি সীতাকুণ্ডে নিজ গ্রামে শিশুদের জন্য ‘চাইল্ড কেয়ার’ নামে মানসম্পন্ন একটি ক্লিনিক চালু করেন।নিহত ডাক্তার শাহ আলম সীতাকুণ্ড কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরার মরহুম মাস্টার আজিজুল হকের ছেলে।
প্রতিবেদক/ওয়াসিফ হোসেন