ডায়ালাইসিস করাতে আর্থিক সংকটে পড়েন ৯৩% রোগী

সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

দেশের যেসব কিডনি রোগীকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস সেবা নিতে হয়, তাঁদের মাসিক গড় ব্যয় ৪৬ হাজার ৪২৬ টাকা। বড় অঙ্কের এই অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে ৯৩ শতাংশ রোগীর পরিবার আর্থিক সমস্যায় পড়ে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। ‘আউট অব পকেট কস্ট অব কিডনি ডায়ালাইসিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি আজ সোমবার বিআইডিএসের চার দিনব্যাপী ‘বার্ষিক বিআইডিএস সম্মেলন-২০২৪’-এর তৃতীয় দিনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্মেলনটি হচ্ছে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে।

সম্মেলনের ‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্য’ অধিবেশনে তিনটি গবেষণাপত্র তুলে ধরা হয়, যার একটি কিডনি চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে। বাকি দুটি ছিল কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেকারত্ব নিয়ে।

কিডনি চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে গবেষণাপত্রটি তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা ফেলো আবদুর রাজ্জাক সরকার। তিনি বলেন, “গবেষণাটিতে সরকারি, বেসরকারি ও বেসরকারি সংস্থাভিত্তিক (এনজিও) হাসপাতালের ৪৭৭ রোগীর ওপর জরিপ করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ৩১ পর্যন্ত।”

নতুন জরিপের বরাত দিয়ে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডায়ালাইসিসের পেছনে দেশের একজন কিডনি রোগীকে মাসে সর্বনিম্ন ৬ হাজার ৬৯০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। গড় ব্যয় ৪৬ হাজার ৪২৬ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ ৩৫ শতাংশের মতো খরচ হয় ডায়ালাইসিস ফি বাবদ। প্রায় ২৩ শতাংশ ব্যয় হয় ওষুধ বাবদ। সব মিলিয়ে হাসপাতালে খরচ মোট ব্যয়ের প্রায় ৭৯ শতাংশ। যাতায়াত, খাবার, থাকা, অনানুষ্ঠানিক (ঘুষ, বকশিশ) খরচ ইত্যাদির পেছনেও ব্যয় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় যাতায়াতে, মোট ব্যয়ের প্রায় ৯ শতাংশ।

রোগীরা কোন ধরনের হাসপাতালে বেশি সেবা নিতে যান, তা-ও উঠে এসেছে জরিপে। দেখা যায়, ডায়ালাইসিস সেবা নিতে রোগীদের ৪২ দশমিক ৫৬ শতাংশ যান এনজিওভিত্তিক হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালে যান প্রায় ৩৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বেসরকারি হাসপাতালে যান ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ রোগী। ব্যয় বেশি বেসরকারি হাসপাতালে, মাসে গড়ে খরচ ৭৭ হাজার ৫৮৯ টাকা। সরকারিতে তা ৩২ হাজার ৫৫২ টাকা এবং এনজিওভিত্তিক হাসপাতালে ৩৯ হাজার ৯১২ টাকা।

বিআইডিএসের গবেষণায় বলা হয়, প্রায় ৯২ দশমিক ৮৭ শতাংশ পরিবারই ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়ে। সাড়ে ১৯ শতাংশ রোগী প্রয়োজনের চেয়ে কম ডায়ালাইসিস করান। হারটি গরিবদের মধ্যে বেশি। রোগীদের মধ্যে যাঁরা কম ডায়ালাইসিস করান, তাঁরা কারণ হিসেবে (৯৫ শতাংশ) অনেক বেশি ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেছেন।

প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।

Moin Uddin Ahmad Sibli

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

১০ কোটির এমআরআই মেশিন সচল করতে লাগবে আরো সাড়ে ৩ কোটি টাকা

Tue Dec 10 , 2024
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি অচল হয়ে আছে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে। আশার বিষয় হল – অচল মেশিনটি সচল করতে উদ্যোগী হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেশিনটি মেরামতে প্রয়োজন পড়েছে আরও সাড়ে তিন কোটি টাকা। আর এই অর্থ বরাদ্দের অনুমোদনও চূড়ান্ত […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo