প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৯ আগস্ট, ২০২০, শনিবার
চতুর্থ উপজেলা হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হল। গত ২৮ আগস্ট (শুক্রবার), ডা. মোরশেদ আলীর উদ্যোগে সামাজিক সহায়তায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনের ব্যতিক্রমধর্মী এই অনুষ্ঠানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, কর্মরত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ উপজেলার সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে ডা. মোরশেদ আলী বলেন,
“প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য, অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে আমার সংগ্রাম অব্যাহত। যার ধারাবাহিকতায় চতুর্থ উপজেলা হিসেবে রামগড় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপিত হল। প্রত্যন্ত উপজেলার পাহাড়ি জনপদ হলেও, এই হাসপাতাল সব সময় রোগীতে ভর্তি থাকে এবং ৫০ জনের অধিক রোগীই থাকে। সবাই জেনে আশ্চর্য হবেন, করোনার যে ভয়াল ছোবল শুরু হয়েছিল উহান প্রদেশ থেকে, তার ঢেউ আছড়ে পড়েছে এই প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদেও। আক্রান্ত ৫৫ জন রোগী এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে ভর্তি ছিল এবং বিভিন্ন সময় চিকিৎসা নিয়েছে। যেহেতু করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলমান আছে, তাই এই যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য যুদ্ধ সরঞ্জাম হিসেবে প্রয়োজন অক্সিজেন। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে মজুদ আছে, যে পরিমাণ সরবরাহ আছে, তা কোভিড মোকাবেলার সক্ষমতার জন্য এ মুহূর্তে উপযোগী না।”
উপজেলায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনের সামাজিক উদ্যোগে সহায়তা করা সকল ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন,
“সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ভাবে সামাজিক, মানবিক মানুষগুলো এগিয়ে এসেছে বলেই আজকে আমরা সরকারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এই প্রত্যন্ত উপজেলাগুলোকে কোভিড মোকাবেলায় সম্পূর্ণতা অর্জনে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কাজের অংশ হিসেবে এই অক্সিজেন লাইন স্থাপন। আমার এই প্রচেষ্টায় যে মানবিক মানুষগুলো অংশগ্রহণ করেছেন, সবাইকে আমি আবারও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোয় সাধারণত ১০-১২ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকে। একটি সিল্ডিন্ডার দিয়ে ৪-৫ জন রোগীকে, ২-৩ দিন অক্সিজেন দেওয়া যায়। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী ছাড়াও যেকোন সঙ্কটাপন্ন রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি সিলিন্ডার খালি হলে, অক্সিজেন পূর্ণ করতে বিভাগীয় শহরে আসা প্রয়োজন। যার কারণে সব সময় অক্সিজেন সংকট থেকে যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয়। মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হন চিকিৎসকরা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন এই অক্সিজেন ঘাটতির অন্যতম সমাধান।
অনুষ্ঠানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রতীক সেন বলেন,
“আজ স্থাপিত হল সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। রামগড়ের মানুষ এর সুফল পাবে। আশা করি রামগড়ের কোন রোগীকে অক্সিজেন সঙ্কটের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করতে হবে না। প্রসব পরবর্তী কোন মায়ের শ্বাসকষ্ট হলে আমরা যথাযথ সেবা দিতে পারবো।”
তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. মোরশেদ আলী, তাঁর সামাজিক সহায়তায় অংশগ্রহণকারী সকল ব্যক্তি এবং উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার লিংকঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=3325771490822819&id=100001700018119
সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনের পাশাপাশি রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পালস অক্সিমিটার, ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, মাস্ক, হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়।
এর আগে ডা. মোরশেদ আলীর উদ্যোগে এবং সামাজিক সহযোগিতায় সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়।