ক্লাবফুট বা মুগুর পা বা বাঁকা পায়ের পাতার অভিশাপমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্লেনকো ফাউন্ডেশনের ‘ওয়াক ফর লাইফ’ প্রকল্পের উদ্যোগে পালিত হলো বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস।
গত মঙ্গলবার (০২ জুন, ২০১৫ ইং) সকালে দিবসটি উপলক্ষে সংস্থাটি একটি সচেতনতামূলক র্যালীর আয়োজন করে। র্যালীটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে পুনরায় ঢামেকে এসে শেষ হয়।
এ সচেতনতামূলক র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন ঢামেকের ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান, অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এস জামান, গ্লেনকো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কলিন ক্যাম্পবেল ম্যাকফারলেইন, কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
এ সময় চিকিৎসাপ্রাপ্ত শিশু এবং তাদের অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন। র্যালী শেষে ক্লাবফুটের চিকিৎসক ও ক্লাবফুট শিশুদের অভিভাবকেরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। এ সময় সুস্থ হওয়া সন্তানের নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার কাহিনী বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অনেক মা।
র্যালী শেষে ঢামেকের ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বিনা খরচে ক্লাবফুট শিশুদের চিকিৎসায় ওয়াক ফর লাইফের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
ঢামেকের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এস জামান জানান, ক্লাবফুট একটি জন্মগত বিকলাঙ্গতা। আমাদের দেশে এর পরিমাণ অনেক অনেক বেশি। যা পায়ের পাতা থেকে হাঁটু এমনকি কোমর পর্যন্ত হতে পারে। ক্লাবফুট শিশুর জন্ম নিয়ে সমাজে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে।
চিকিৎসায় ভাল হয়ে যাওয়া ক্লাবফুট শিশু সিফাতের মা জয়নাব বেগম বলেন, জন্মের সময় আমার বাচ্চার পায়ের পাতা বাঁকা ছিল। এজন্য আমাকে অনেকের গালমন্দ শুনতে হয়েছে। আমার বাচ্চা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
দেশে প্রতিবছর ক্লাবফুট বা বাকা পায়ের পাতা নিয়ে জন্ম নেওয়া পাঁচ হাজার শিশুর মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে আসছে ওয়াক ফর লাইফ। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ওয়াক ফর লাইফ বাংলাদেশের ৪৯টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ক্লাবফুট শিশুদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
গত পাঁচ বছরে ক্লাবফুট নিয়ে জন্ম নেওয়া মোট ২১৬৩০ টি শিশুর মধ্যে ১৪২২৯ টি শিশুকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: BANGLANEWS24.com
পরিমার্জনা: বনফুল