সোমবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৪
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির কারণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে গঠিত ছয় সদস্যের দুই পৃথক বিশেষজ্ঞ কমিটিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ও টেকসই সমাধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আজ (৪অক্টোবর) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “বিশেষজ্ঞ কমিটি দুই সপ্তাহ আগে প্রথম বৈঠক করেছে এবং আমরা তাদের কাছ থেকে আরও কার্যকর উপায়ে ডেঙ্গু মোকাবেলায় কিছু পরামর্শ পেয়েছি। আমরা তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর সমাধান খুঁজতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের সাথে মশাবাহিত রোগের ওপর একটি পৃথক জরিপ পরিচালনার পাশাপাশি কীটনাশকের মানসম্মত ও নিখুঁত ডোজ ব্যবহার নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছেন।”
একইসাথে ডিএনসিসি এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার কর্মীর মাধ্যমে সকালে ও বিকেলে নিয়মিতভাবে দুইবার লার্ভা উৎপাদন ও বৃদ্ধি প্রতিরোধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ডিএনসিসির প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান ছাড়াও বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মো. রাশেদুল ইসলাম, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. গোলাম সারওয়ার, কীটতত্ত্ববিদ ডা. মো. রেজাউল করিম, ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির গণমাধ্যমকে জানানে, “তিন সপ্তাহ আগে আমরা বিশেষজ্ঞ কমিটির সাথে প্রথম বৈঠক করেছি এবং বিশেষজ্ঞরা আমাদের কাছে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তুলে ধরবেন যাতে কার্যকর উপায়ে নগরীর ডেঙ্গুর ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায়। পরিকল্পনাগুলো পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করব।”
ডিএনসিসির মতো ডিএসসিসি এলাকায়ও তাদের এক হাজার ৫০ জন কর্মী দ্বারা নিয়মিত মশা বিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি তাদের নেওয়া পদক্ষেপগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণের হার তিন থেকে চার শতাংশ কমিয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিশেষজ্ঞ কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- ডিএসসিসি’র প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফিরোজ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শেফালী বেগম, ঢাবির মেডিকেল কীটতত্ত্ববিদ ড. তানজিন আক্তার ও ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মিজানুর রহমান।
কমিটিগুলোকে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন অনুসরন করে পর্যালোচনা ও সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কমিটিগুলোকে কীটনাশকের ডোজ, কার্যকারিতার সময়কাল এবং পরবর্তী প্রভাব যাচাই করে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বেসলাইন জরিপ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিবৃতি অনুসারে, এবছর ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৪৭১ জন এবং ডেঙ্গু রোগে মারা গেছে ৩১৪ জন। গত বছর, দেশে এই সময়কালে মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন মানুষ সংক্রমিত হয়েছিল যার মধ্যে ১ হাজার ৭০৫ জন ডেঙ্গুজনিত রোগে মৃত্যুবরন করেন।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী